রফিকুল ইসলাম সবুজ,
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক সময়ের আলো:
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দূর্নীতিমুক্ত জনবান্ধব জনপ্রশাসন গড়তে জনপ্রশাসনে অনেক সংস্কার আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, আমলাতান্ত্রিকতা দূর করা হয়েছে। একসময়ে লালফিতার যে দৌরাত্ব ছিল তা এখন আর নেই। আমরা জনমুখী জনপ্রশাসন গড়তে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। সন্তানদের জন্য যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রেখে যেতে পারি সেজন্য কাজ করছি।
১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহে দেওয়া ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘প্রতিজ্ঞা করুন, আমরা দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থাকব। দুর্নীতিবাজদের খতম করবÑ আমরা দেশকে ভালোবাসবো, দেশের মানুষকে ভালোবাসবো।’ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষন আমাদের সবার জন্য নির্দেশনা। সেই নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করছি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই দেশে দুর্নীতি বেড়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি। সেই লক্ষে কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কাজের বিলম্ব যেখানে দুর্নীতি সেখানে। বিলম্বগুলো করাই হয় দুর্নীতি করার জন্য। কোন ক্রমেই যাতে কাজের বিলম্ব না হয়, সেজন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আজকের ফাইল আজই ছেড়ে দিতে চাই। সাত দিনের কাজ দুই দিনে করার নীতি গ্রহন করা হয়েছে। তিনি বলেন, অবৈধ টাকা আয় করে তা রাখতে পারবে না এটা নিশ্চিত করতে পারলে দূর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, মুজিব বর্ষে আমাদের শপথ হবে দূর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দূর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি।
তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ায় এখন দুর্নীতির পরিমান কমেছে। ভুমিসহ বেশ কয়েকটি সেক্টরে আগে দূর্নীতির প্রচুর অভিযোগ পাওয়া যেত। এখন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দুর্নীতি কমানো হচ্ছে। অভিযোগ প্রমান পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একারনে সকলে সতর্ক হচ্ছে বিপদে পড়ার ভয়ে। ফরহাদ হোসেন বলেন, দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের কাজের আরো ব্যপ্তির জন্য জনবল চেয়েছে। আমরা দুদককে জনবল দিচ্ছি। প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদকের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। আইন মেনে তারা যেন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন। সন্তানদের জন্য যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রেখে যেতে পারি সেজন্য কাজ করছি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের পাশাপাশি ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অঙ্গীকার করেছে। আর উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রয়োজন গতিশীল জনপ্রশাসন। সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন সৃষ্টির মাধ্যমে জনবান্ধব ও বন্ধুত্বপূর্ণ জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে কাজ করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে ডিজিটাল ও সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চান, সেভাবে জনপ্রশাসনকে গড়ে তোলা হচ্ছে। কারণ, সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই আধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎকর্ষতা সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মকর্তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, ন্যায়পরায়ণতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। হয়রানিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রশাসনের রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ এলে তার তদন্তÍ শেষ হতে দীর্ঘসূত্রিতার যে অভিযোগ সে প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, তদন্ত করতে করতে ৮ বছর চলে গেছে এমন ঘটনাও শুনেছি। তবে এখন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে আইন মেনেই বিচার হচ্ছে। বিভাগীয় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।