সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এর কারণে সংসদ সদস্যরা দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ভোট দিতে পারে না। আর এ কারণেই সংসদে একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। সোমবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় পার্টির বনানী অফিস মিলনায়তনে শ্রমিক পার্টির যৌথ সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংসদীয় সরকার ব্যবস্থাকে বিকলাঙ্গ করেছে। ৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী ক্ষমতা হস্থান্তর করেন। সেই জোটের রূপরেখা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে দেশে প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধানই সরকার প্রধান হচ্ছেন, তিনি যা বলবেন তাই হবে। কারণ, দলের বাইরে কথা বললে সংসদ সদস্যের পদ চলে যাবে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি হচ্ছে বাংলাদেশের সব চেয়ে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে যেমন উন্নয়ন করেছে ঠিক তেমনি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মনে কষ্ট দিয়েছে। দেশের মানুষ উন্নয়নের কথা বেশি দিন মনে রাখে না কিন্তু কষ্টের কথা দীর্ঘদিন মনে রাখে। আবার বিএনপি চরম নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। বিএনপি নেতা-কর্মীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষও বিএনপিকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় জাতীয় পার্টি হচ্ছে জনগণের আস্থার একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণ চায় জাতীয় পার্টি আরও শক্তিশালী হোক, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করুক।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। তাই অপরাধ প্রবণতা রোধ করতে পারছে না সরকার। প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। এরশাদের শাসনামলে অপরাধীদের বিচার হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে শুধু জাতীয় পার্টিই দেশে উন্নয়ন এবং সুশাসন দিতে পারে। আগামী নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আসরাফুজ্জামানেরর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আজম খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুস সালাম, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এম.এ. রাজ্জাক খাঁন, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রমুখ।