নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুজিববর্ষে সংবিধানের সুফল বাংলার মানুষের ঘরে পৌছে দেওয়ার অঙ্গীকার করার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধারণ করে ১৯৭২ সালের সংবিধান যেন বাংলার মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণের মধ্য দিয়ে অর্থবহ হয়। সংবিধানকে সুরক্ষিত ও সমন্বিত রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সদা সচেতন থাকতে হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের কাজ করতে হবে। এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে। রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনের মূলতবি বৈঠকের শুরুতে তিনি এ আহ্বান জানান। অধিবেশনের শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন নিয়ে দেশী-বিদেশী মনীষীদের উদ্ধৃতি ও লেখার অংশ বিশেষ তুলে ধরেন। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
এ সময় স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণের অভিপ্রায় পরম অভিব্যক্তি এই সংবিধান। ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূল প্রতিপাদ্য ‘ভবিষত বংশধররা যদি সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারে তাহলে আমার জীবন স্বার্থক হবে শহীদদের রক্তদান স্বার্থক হবে। আমাদের সকলকে এই মর্মকথা উপলবদ্ধি করতে হবে। মূল প্রতিপাদ্য স্মরণ রাখতে হবে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে হবে। এই সংবিধানকে পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করার দায়িত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের ওপর ভবিষত বংশধরদের এবং ভবিষত প্রজন্মের ওপরই ন্যস্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধারণ করে এই সংবিধান যেন বাংলার মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণের মধ্য দিয়ে অর্থবহ হয়। সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের কাজ করতে হবে। এই সংবিধান তখনই স্বার্থক হবে যখন বাংলার মানুষ ক্ষুধা দারিদ্র বঞ্চনা ও বৈষম্য থেকে মুক্ত হয়ে উন্নত জীবন পাবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. শিরীন শারমিন বলেন, বাঙালির প্রাণের গভির হতে উৎসারিত নির্মল ভালবাসায় অশ্র“ধারায় সিক্ত হৃদয় নিংড়ানো আবেগ ও পরশ শ্রদ্ধায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব থাকবেন সদা সুক্ষ সমুজ্জল। ইতিহাসের পাতায় চিরজাগ্রত অমর এক নাম শেখ মুজিব। তারই প্রেরণায় বাঙালি এগিয়ে যাবে জীবনের জয়গান। এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে তুলে ধরে স্পিকার বলেন, গত ১৩ নভেম্বর ২০২০ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক বক্তৃতায় বলেন, ‘আমি মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি।’ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুধাবন করে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের উন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের লাইন তুলে ধরে ড. শিরীন শারমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবকিছুর আগে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিতেন। জনগণের প্রতি তার ভালবাসা ছিল সীমাহীন। আমি এখন যা করছি তা জাতির পিতার আদর্শের প্রতিচ্ছবি। আসুন আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দারিদ্র ক্ষুধামুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখি। কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি তুলে ধরে স্পিকার বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, রবিন্দ্রনাথের ভাষায় এভাবেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর মুজিববর্ষে এই বিশেষ অধিবেশনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। ‘তোমারই নাম বলব আমি বলব নানা ছলে, বলব বিনা ভাষায়, বলব আশায় ,বলব মুখের হাসি দিয়ে, বলব চোখের জ্বলে, তোমারই নাম বলব আমি বলব নানা ছলে।