সংসদ প্রতিবেদক:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ-২০২০) উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণপ্লাজায় তৈরি করা বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে বাঙ্গালীর মুক্তির সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে উল্লেখ করে তা দেখার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন পরিদর্শনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখার পর উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ডেপুটি স্পিকার বলেন, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের জন্য গৌরবের। এই ভাষণের মধ্য দিয়েই মহান স্বাধীনতার স্থপতি মুক্তি সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা ও ইতিহাস তুলে ধরেছিলেন। জাতীয় সংসদ কর্তৃক আয়োজিত এই বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে রয়েছে রাজনীতির মহান কবি’র সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করলে তরুণরা বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।
রাজনীতির মহান কবি বঙ্গবন্ধু’র অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে নেওয়া একটি উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘একজন মানুষ হিসেবে আমি গোটা মানবজাতি নিয়েই চিন্তিত। একজন বাঙালি হিসেবে বাঙালিদের সাথে সম্পৃক্ত সবকিছুই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। আমার এই নিরন্তর সম্পৃক্ততার পেছনে রয়েছে ভালবাসা, অক্ষয় ভালবাসা। এই ভালবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’-এই বক্তব্যে মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়, একটি প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা’র মতো বইগুলো সকলকে পড়ার আহ্বান জানান তিনি।
অভিজ্ঞ আইন প্রণেতা ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু এর আগেই ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমেই মূলতঃ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি। আর স্বাধীনতার বীজ রোপণ করা হয় ১৯৪৮ সালে। এরপর ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা মামলা ও ৭০ এর নির্বাচনসহ আন্দোলনের সকল ধাপ স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশ। যা এই প্রদর্শনীতে ফুটে উঠেছে। প্রদর্শনীর আয়োজনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ২৪ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ অন্যান্য ভাষণ ও বাণীসমূহ ও তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও কর্মময় জীবনের দুর্লভ চিত্রকর্ম, শিল্পকর্ম, আলােকচিত্র ও লেখনীর সমন্বয়ে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ‘প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এই প্রদর্শনী গত ১৫ নভেম্বর রাতে উদ্বোধন করেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী প্যাভিলিয়নে বসে বিশাল পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পুরো ভাষণটি প্রত্যক্ষ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্যাভিলিয়নটি ঘুরে দেখেন। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও সেটি পরিদর্শন করেছেন।