দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে বাকশাল গঠন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নই সরকারের মূল লক্ষ্য বলে উল্লেখ করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো’-এটাই ছিলো জাতির পিতার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল গঠন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও অস্থিরতার মধ্যে এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু, যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে দ্রুত উন্নতি করা। দুর্ভাগ্য! সেটা তাঁকে করতে দেওয়া হলো না। তার আগে ১৫ আগস্টের ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হলো। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়িত হলে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত হতো।’

১৫ নভেম্বর রোববার রাতে জাতীয় সংসদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর সাধারণ আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে তিনি বাকশাল গঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যেরও উদ্ধৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার একটা স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। একদিনে চট করে এই স্বাধীনতা আসেনি। এটা তাঁর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।’

বাকশাল গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, ‘তিনি যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলেন, তখন স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, দেশীয়-আন্তর্জাতিক চক্র তার যাত্রাপথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলো। দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে দেশের মানুষ হত্যা করলো। রাতের আঁধারে গণপরিষদ সদস্যদের হত্যা করতে শুরু করলো। ঈদের নামাজে পর্যন্ত সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হলো। হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করলো। পাটের গুদামে আগুন দেওয়াসহ থানা লুট করলো। আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি তৈরি হওয়াসহ নানা ধরনের ঘটনা। তার মধ্যে এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু, যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে দ্রুত কীভাবে উন্নতি করবেন।’

বাকশাল গঠনের কারণ ব্যাখ্যা করে সংসদ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কেবল এই বিষয়টি (বাকশাল) ভালোভাবে আসেনি। এটা নিয়ে অনেকে নানা ধরনের সমালোচনা করেন। বঙ্গবন্ধু যখন এই পদক্ষেপটা নেন, তখনও নানা ধরনের সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তিনি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করেছেন—এটা করেছেন ওটা করেছেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান, নানা ধরনের কথা বলেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সেই বিষয়ে কিছু বক্তব্য রাখতে চাই জাতির পিতা যখন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেন, সমগ্র জাতিকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেই তিনি দ্রুত জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। এদেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা, এটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। এটা বাস্তবায়নের জন্য তিনি যে কাজগুলো করে গিয়েছিলেন, সেটার সমালোচনা এমনভাবে শুরু হয়ে গেলো যে, তারপর তো দুর্ভাগ্য যে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। যার কারণে তিনি এই কাজটি সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। কিন্তু কী করতে চেয়েছিলেন সেটাই বড় কথা।’
দলীয় একাধিক সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বক্তৃতার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত নেই। যে জাতি ভিক্ষা করে, আমাদের খাবার দাও, টাকা দাও, সেই জাতির ইজ্জত থাকতে পারে না। আমি ভিক্ষুক জাতির নেতা থাকতে চাই না।’ বাংলাদেশের মানুষ সম্মান নিয়ে চলুক, সেটাই তিনি চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ঘুণে ধরা সমাজকে আঘাত করতে চেয়েছিলেন। তিনি গ্রামে গ্রামে বহুমুখী বাধ্যতামূলক কো-অপারেটিভ করতে চেয়েছিলেন। ৫ বছরের পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। ওই সময় তিনি কৃষি যান্ত্রিকীরণের কথাও বলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘কো-অপারেটিভের মাধ্যমে জমি চাষ হবে। তিনগুণ ফসল হবে।’ এর মাধ্যমে তিনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চেয়েছিলেন।’’

শেখ হাসিনা জানান, রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু থানায় থানায় কাউন্সিল গঠন করার কথা বলেছিলেন। এতে কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি থাকবে। যুবক প্রতিনিধি থাকবে। কৃষক প্রতিনিধি থাকবে। শ্রমিক ও মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তারাই থানাটি চালাবে। সব মহকুমা জেলা হয়ে যাবে। সেখানে একটি করে প্রশাসনিক কাউন্সিল হবে। অর্থাৎ তিনি এমন একটি সিস্টেম করতে চেয়েছিলেন, যার মধ্যে মানুষ সম্পৃক্ত থাকবে। তিনি মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তর করেন। তিনি ৬০টি জেলা করেন। জেলা গভর্নর নিয়োগ করেন। তাদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেন।’ তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু শাসন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সরকার আর আইয়ুব খানের পদ্ধতির পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তিনি দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ আমলের প্রশাসন পরিবর্তনকে তিনি বিপ্লব হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতিশীল কর্মী বাহিনীর কথা বলেছিলেন। ভালো লোক যেখানেই থাকুক তাদের এক জায়গায় করে কাজে লাগানোর কথা বলেছিলেন। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের উন্নতি করতে চেয়েছিলেন। পুরো জিনিসটাকে তিনি একটি ধারাবাহিকতার মধ্যে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। যেন উন্নতিটা তৃণমূল পর্যায় থেকে হয়। সেটাই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্ট্যান্ড নিয়েছিলেন। তিনি সিস্টেম পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘ঘুণে ধরা সিস্টেম দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা যায় না।’ এজন্য সব ভেঙে ফেলে নতুন করে গড়তে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেওয়ার কথা বলেছিলেন।’’

বাকশাল গঠনের সময় (২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫) সংসদে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য। এজন্য তিনি কনস্টিটিউশনে যে অ্যামেন্ডমেন্ট করেছিলেন, সেখানে কয়েক বছরের প্রোগ্রাম তিনি নিয়েছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, ৫ বছর তিনি এটা করতে পারলে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারতো। দুর্ভাগ্য, সেটা তাঁকে করতে দেওয়া হলো না। তার আগে ১৫ আগস্টের ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হলো।’
সংসদে দেওয়া জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘অ্যামেন্ডমেন্ট, কনস্টিটিউশনে যে নতুন সিস্টেমে আমরা যাচ্ছি—এটাও গণতন্ত্র। শোষিতের গণতন্ত্র। এখানে জনগণের ভোটের অধিকার থাকবে। আমাদের সামনের কাজ দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, উৎপাদন বাড়াতে হবে। পপুলেশন প্ল্যানিং করতে হবে। দুর্নীতি-ঘুষ, চোরাকারবারি, মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাকে কাজ করতে হবে।’ তিনি দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যে চমৎকার পদক্ষেপ নিলেন, সেটাকে নস্যাৎ করা হয়েছিল, যে কথাগুলো তিনি বলেছিলেন তার পুরো জিনিসটাকে উল্টো ব্যাখ্যা দিয়ে।’’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমরা জাতির পিতার জীবনী নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু যে কাজটির তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন করার, পদক্ষেপও নিয়েছিলেন, কিন্তু করে যেতে পারলেন না। আর তার ফলাফলটা কী? আজকে স্বাধীনতার ৪৯ বছর। এখনও বাংলাদেশৃ হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ সরকারে আসতে পেরে যতটুকু উন্নতি করতে পেরেছি। এর বাইরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশের উন্নতি করেনি। মানুষের উন্নতি করেনি। করার ইচ্ছাও ছিল না। তারা জানতোও না। কারণ, জাতির পিতা শেখ মুজিব তো সারা বাংলাদেশ ঘুরেছেন। চষে বেড়িয়েছেন। বাংলাদেশকে তিনি চিনতেন, জানতেন। মানুষের কষ্টটা তিনি জানতেন। সেটা জানতেন বলেই দেশের মানুষের ভাগ্যটা কীভাবে পরিবর্তন হবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। সেভাবেই তিনি কিন্তু কাজ করতে চেয়েছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখনই সরকারে এসেছি, সব সময় সেই কাজটি করেছি। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, তা যেন সম্পন্ন করতে পারি। এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। একমাত্র চিন্তা।’
বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। তখন একদল নেমেই গেলো তাঁর বিরুদ্ধে। দেশের বিরুদ্ধে। মানুষের বিরুদ্ধে। তারা কারা? কেন? তার মানে পাকিস্তানি প্রভুদের দাসত্বটাকে ভুলতে পারেনি। তারা দাসত্বটা চেয়েছিল। স্বাধীনতা নয়। কিন্তু আপামর জনসাধারণ তো জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র কাঁধে নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। এজন্য তিনি স্বাধীনতার সুফলটা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।’

নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তনও বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর চিন্তা স্বচ্ছ ছিল বলেই স্কুলশিক্ষকের মতো টাকা-পয়সা নেই—এমন মানুষ নির্বাচনে জিতে এসেছিলেন। নির্বাচনে অস্ত্র ও টাকার খেলা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।’ পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা নির্বাচনে প্রহসন করতে করতে সিস্টেমটাকে নষ্ট করে দিয়ে গেছে বলে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য, সেই চেষ্টাটা আমরা করে যাচ্ছি।’

আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার কর্মময় জীবন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতা কিন্তু চট করে একদিনে আসেনি। দীর্ঘ দিন তার সেই লালিত স্বপ্ন। সেটা তিনি নিজে বলেছেন। তিনি যখন যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ গড়ে তোলে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এবং দেশীয় আন্তর্জাতিক চক্র যখন তার যাত্রাপথে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি করল। দুর্ভিক্ষ হলো এদেশের মানুষ হত্যা করল রাতের আধারে গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের হত্যা করা শুরু করল। এমন কি ঈদের নামজে পর্যন্ত সংসদ সদস্যদের হত্যা করা হলো। এরপর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। তার লক্ষ্যছিলো দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন।

দেশ ও জনগণের উন্নয়নে জাতির পিতার নেওয়া সমবায় কার্যক্রমের বর্ণণা দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিটি গ্রামে বাধ্যতামূলক সমবায় করতে চেয়েছিলেন। জমির মালিক হবে কৃষক। উন্নত সার-বীজ সরাসরি তাদের কাছে যাবে। যা থেকে তিনগুণ ফসল উৎপাদন হবে। কৃষকের ফসল কৃষকরাই ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করবে। এতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। সমবায় সংক্রান্ত বঙ্গবন্ধুর ওই উদ্যোগ সফল করতে পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার।

সংসদ নেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ এসেছে। এই সংকটের মধ্যেও হঠাৎ বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য কি? তিনি আরো বলেন, এই করোনার সময়েও যাতে অর্থনীতি সচল থাকে সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশেষ ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছি। এতে অসুবিধা কোথায়? তারপরও কেন অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে?
রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির জড়িত থাকার ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে নামমাত্র অংশগ্রহণ করে। টাকা পয়সা যা পায়, পকেটে নিয়ে রেখে দেয়। ইলেকশনের দিন ইলেকশনও করে না। এজেন্টও দেয় না। কিছুই করে না। মাঝপথে ইলেকশন বয়কটের নাম দিয়ে বাসে আগুন দিয়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এটা উদ্দেশ্যটা কী?

সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেকগুলো কাজ করেছি। দারিদ্রের হার কমাতে পেরেছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চলে না। নিজেদের অর্থে বাজেট দিতে পারছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মানের চ্যালেঞ্জ আমরা গ্রহণ করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জাতি গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি।

জাতির পিতাকে হত্যা না করা হলে দেশ অনেক আগেই উন্নত হতো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসতে পেরেছিলো বলেই, আমরা যতটুকু সম্ভব উন্নতি করতে পেরেছি। এর বাইরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা তো দেশের উন্নতি করেনি মানুষের উন্নতি করেনি। করার ইচ্ছাও ছিল না। আমরা যখনই সরকারে এসেছি, জনগণের উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। তিনি আরো বলেন, আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো। সুবর্ণজয়ন্তীর সেই অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email