চীনা কোম্পানি জেডটিইর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ এনবিআরের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চীনা কোম্পানি জেডটিই করপোরেশনের বিরুদ্ধে বর অঙ্কেও কর ফাঁকির অভিযোগ এনেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পাশাপাশি, তাদের সঙ্গে কাজ করা ৫ টি বাংলাদেশি কোম্পানিকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিল ও তদন্তে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে এনবিআরের ইনভেস্টিগেশন সেন্টার (সিআইসি)। গত ৬ ডিসেম্বর কর অঞ্চল ১১-এর ডেপুটি কর কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ আহ্বান জানানো হয়। চিঠিটি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি), বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল), টেলিটক ও রবির প্রধান কার্যালয় বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশে চাইনিজ কোম্পানি জেডটিই করপোরেশনের ব্যবসায় যার মধ্যে সরঞ্জাম ও সেবা অন্তর্ভুক্ত সম্পর্কে অবগত। আমরা ইতোমধ্যে কোম্পানিটি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছি। স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করছি। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সাম্প্রতিক সময়ে চাইনিজ কোম্পানিটি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসায়ের প্রসার ঘটিয়েছে। তারা বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কোম্পানির কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে। বিষয়টি এনবিআর দেখছে। তাই এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত করতে চাই। এটির টেন্ডার বা প্রকল্প এনবিআরের ট্যাক্স আইনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ কিনা তা যাচাই করতে চাই।’

এতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বিদেশি কোম্পানি বড় প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশে আসছে। বিদেশি কোম্পানির স্থানীয় কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা দেশীয় কর আইন মেনে চলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইনভেস্টিগেশন সেন্টার (সিআইসি) চাইনিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করে। বিষয়টি নিয়ে পিজিসিবি, বিসিসি, বিটিসিএল, টেলিটক, রবি কোম্পানির কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোম্পানিটি বিগত কয়েকবছরে বড় ধরনের আইসিটি অবকাঠামো প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছে। যার পরিমাণ ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এতে বলা হয়, ‘এনবিআরের তদন্ত অনুযায়ী অধিকাংশ প্রকল্পই চীনা সংস্থা দ্বারা স্বাক্ষরিত, এর সঙ্গে বড় রকমের কর ফাঁকি ও প্রকল্পে কর্মরতদের (পার্মানেন্ট স্টাব্লিশমেন্ট) জড়িত। যেহেতু অনশোর পরিষেবার একটি অংশ স্থানীয় কোম্পানি দ্বারা স্বাক্ষরিত সেহেতু এর রাজস্ব এবং কর নিবন্ধন স্থানীয় কোম্পানি দ্বারাই হওয়া উচিত। এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত রাজস্ব ও মুনাফা বাংলাদেশের রেজিস্টার্ড স্থানীয় কোম্পানির কাছেই থাকা উচিত। তবে মুনাফা স্থানান্তর এবং কর ফাঁকির উদ্দেশ্য চাইনিজ কোম্পানিটি দ্বারা পরিষেবা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। যা বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ডের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অপরদিকে টার্নকি কন্ট্রাক্ট টি যদি চাইনিজ কোম্পানিটি দ্বারা স্বাক্ষরিত হয় তাহলে প্রকল্পের ঠিকাদার কাজটি করার জন্য কর্মী ও টেকনিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু যদি একটি চীনা অনশোর কোম্পানির কেউ যদি ওয়ার্ক ভিসা, পার্মানেন্ট স্টাব্লিশমেন্ট ছাড়া কাজ করে তাহলে তা রাজস্ব বোর্ডের স্বার্থের লঙ্ঘন করবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *