যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করার সুপারিশ স্বাস্থ্য সংসদীয় কমিটির

সংসদ প্রতিবেদক:
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন দ্রুত ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশপথে যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। বেসামিরক বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিটি। বুধবার সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম বলেন, যুক্তরাজ্যে করোনার যে নতুন ধরন পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশে আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু ফ্লাইট যেহেতু চলছে, আসার আশঙ্কা থেকে যায়। এ কারণে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করতে বলেছি। দেশে সংক্রমণের শুরুতে কোয়ারেন্টিন নিয়ে কিছু গাফিলতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, কোয়ারেন্টিন যাতে কঠোরভাবে মানা হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে বলেছি আমরা।  মহামারির মধ্যে মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), করোনাভাইরাস পরীক্ষার মতো অনিয়মের কথা তুলে ধরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে জেলা সরকারি হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে।

কমিটির সভাপতি শেখ সেলিম বলেন, গত ২৪ মার্চ আমরা যে বৈঠক করেছিলাম সেখানে করোনাভাইরাসের প্রস্তুতি নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর আমরা দেখলাম আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। মাস্ক আর করোনা পরীক্ষা নিয়েও কেলেঙ্কারি হয়েছে। ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা এরকম পরিস্থিতি দেখতে চাই না। তিনি বলেন, টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা আগে থেকে নিতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি ডাক্তারদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বেসরকারি খাতে এই টিকা দেওয়া যাবে না। যদি কেউ বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করতে চায় তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি জানান, শিশুদের উপযোগী করোনার টিকা যাতে বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পায় সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে টিকা বের হয়েছে সেটি ১৮ বছরের নীচের মানুষদের দেওয়া যাবে না। সেজন্য আমরা টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি যাতে বাংলাদেশ শুরু থেকে পায়।

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে চার কোটি ৯০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে কমিটিকে জানানো হয়।
শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন বৈঠকে অংশ নেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *