ইতিবাচক রাজনীতিতে বিএনপির ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্ধকারে থাকা বিএনপি কখনও বাইরের আলোয় আসার চেষ্টা করে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ৩১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ কথা বলেন তিনি। বিএনপি ইংরেজি নতুন বছরে সরকার পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে, গণমাধ্যমে আসা এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নিজেরা সব সময় অন্ধকারের মধ্যেই আছে, এজন্য চারদিকে অন্ধকার দেখছে। বাইরে যে আলো আছে সে আলোতে তারা কখনও আসতে চেষ্টা করছে না।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর শেষে তারা বলছে আগামী বছর তাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। অবশ্য বিএনপির যে নেতৃত্ব, সেই নেতৃত্বের মাধ্যমে জনগণের কাছাকাছি যেতে পারেনি বরং জনগণ থেকে ক্রমাগত দূরে সরে গেছে। তাদের কাছে তাদের জন্য সব বছরই চ্যালেঞ্জ কিন্তু জনগণ প্রকৃতপক্ষে গত ১২ বছরে বহুদূর এগিয়ে গেছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন পদ্মা সেতু প্রায় হয়ে গেছে এবং সেটি নিজস্ব অর্থায়নে হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রগতিগুলো বিএনপি চোখে দেখছে না মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে এই মহামারী সময়ে মাথাপিছু আয় এক হাজার ৯০০ ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার ৬৪ ডলার হয়েছে। এগুলো তারা দেখে না এজন্য তারা অন্ধকারে আছে। আমি আশা করব আগামী বছর তারা চোখটা খুলবে।

নতুন বছরে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জগুলো কী হতে পারে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাচ্ছে যুগ যুগ ধরে। গত ১২ বছরে চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আগামী বছরও কোনো ব্যতিক্রম নয়। আমি আশা করি, আগামী বছর বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে এসে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসবে, কিন্তু সেটির সম্ভবনা ক্ষীণ। নেতিবাচক রাজনীতি আগামী বছর মোকাবেলা করতে হবে, এছাড়া সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মত, জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা সেটিকেও মোকাবেলা করতে হবে, যা অতীতেও করেছি। মহামারীকালে যেভাবে জনগণের পাশে থাকা দরকার ছিল বিএনপিসহ তার মিত্ররা সেভাবে থাকেনি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের কার্যক্রম সরকারের বিষোদগার এবং সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। তারা দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেনি।

আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দেওয়ার কাজ অব্যহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলকে আরও সুসংহত করতে চাই। দলের মধ্যে যদি সুযোগ সন্ধানীরা থাকে, দলের মধ্যে বিভিন্ন কারণে নিজস্ব স্বার্থ হাসিলে দল করে, তাদের জন্য দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এ ধরনের যারা দলের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে তাদের চিহ্নিত করে দলীয় পদ থেকে, দল থেকে বাদ দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আগামী বছরও সেটি অব্যহত থাকবে।

২০২০ সালে মহামারীর বিভিষিকাময় পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেলেও ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারণে সব কাজ সচল রাখা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, মহামারী অনেক দেশের তুলনায় সক্ষমভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। এই মহামারীতে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মহামারীতে জনগণের পাশে ছিল এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির তিনজন সদস্য মারা গেছেন। উপদেষ্টা কমিটির বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে, এরা সবাই জনগণের পাশে ছিল। জাতীয় সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদের মধ্যে বহুজন আক্রান্ত হয়েছেন, মন্ত্রিসভার প্রায় এক তৃতীয়াংশ সদস্য করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন, একজন সদস্য আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। আওয়ামী লীগের প্রায় ছয় শতাধিক নেতাকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আওয়ামী লীগ এক কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে।
এ সময় তথ্য সচিব খাজা মিয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *