নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার শহর থেকে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের পথে যাত্রা শুরু করছে পর্যটকবাহী বিলাসবহুল প্রমোদতরি ‘বে ওয়ান ক্রুজ শিপ’। ২০ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটায় কর্ণফুলী নদীর আনোয়ারায় শিপইয়ার্ড টার্মিনালে জাহাজটির সমুদ্রযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে জাপান থেকে অত্যাধুনিক জাহাজটি নিয়ে এসেছে দেশের জাহাজ নিমার্ণ শিল্পের পথিকৃত ‘কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, কক্সবাজারের দুই সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ ও সাইমুম সরওয়ার, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান ও পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাশ। স্বাগত বক্তব্য দেন কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এম এ রশিদ।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের পযর্টনশিল্পের উন্নয়নে জাপান থেকে বিলাসবহুল জাহাজ বে ওয়ান ক্রুজ শিপ দেশে নিয়ে এসেছেন পযর্টনবান্ধব ব্যবসায়ী প্রকৌশলী এম এ রশিদ। বে ওয়ান কক্সবাজারের পযর্টনশিল্পের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, পর্যটনকে ধরে রাখার সব উপকরণ আমাদের আছে। কিন্তু এত দিন নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ-সুবিধা ছিল না বলে পযর্টকদের টানতে পারিনি। বে ওয়ান সে সমস্যা দূর করবে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রশিদ বলেন, জাপান থেকে আনা বিলাসবহুল এই জাহাজে ১৭ ক্রু ছাড়াও যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবেন আরও অতিরিক্ত ১৫০ ক্রু। ৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫৫ ফুট প্রস্থের এই জাহাজের উত্তাল সমুদ্র মোকাবিলার সক্ষমতা আছে। যাত্রীর ধারণক্ষমতা দুই হাজার। এটি ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলবে। এদিন সন্ধ্যায় পৌনে ছয়টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুই প্রতিমন্ত্রীসহ দুই হাজার যাত্রী নিয়ে জাহাজটি কর্ণফুলী নদী থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় জাহাজটি কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়।
দ্রুতগতির জাহাজ বে ওয়ান চালু হলে পর্যটকেরা কম সময়ে নিরাপদে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি জাহাজে রাতযাপনের মাধ্যমে সমুদ্র বিনোদনও উপভোগের সুযোগ পাবেন। সংস্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজার থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় এ জাহাজ সেন্ট মার্টিন পৌঁছাবে। টিকিটের মূল্য আড়াই থেকে চার হাজার টাকা। কেবিনে ভাড়া পড়বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত এ জাহাজ চলাচল করবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই যাত্রীদের পারাপার করা হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ, রাত্রিযাপন এবং বিভিন্ন স্বাদের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থাও আছে এই জাহাজে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, আগে টেকনাফের নাফ নদী দিয়ে ৯টি জাহাজে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যেতেন দৈনিক ৫ থেকে ১০ হাজার পর্যটক। এখন ওই নৌপথে চলাচল করছে মাত্র তিনটি জাহাজ। আর কক্সবাজার থেকে চলাচল করছে একটিমাত্র জাহাজ। এখন দ্রুতগতির জাহাজ বে ওয়ান চালু হলে পর্যটকেরা কম সময়ে নিরাপদে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি জাহাজে রাতযাপনের মাধ্যমে সমুদ্র বিনোদনও উপভোগের সুযোগ পাবেন। এতে পর্যটনশিল্পে নতুনমাত্রা যুক্ত হবে।