নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বারিধারায় জামিয়া মাদানিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসানের অনুপস্থিতিতে হেফাজতের অর্থ সম্পাদক ও বিতর্কিত নেতা মুফতি মনির হোসেনের নেতৃত্বে তার অনুসারীদের নিয়ে মাদ্রাসা দখল নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে মাদ্রাসা দখলে নিতে হেফাজতের এ নেতা নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু উগ্র অনুসারীকে বারিধারায় নিয়ে আসেন। এরপর মাদ্রাসার ভিতরে থাকা মুফতি মুনীর হোসেনের অনুসারী শিক্ষক ও উগ্র ছাত্ররা মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত মোহতামিমের সহযোগী মুফতি জাকির হোসেনকে জিম্মি করে মাদ্রাসার দখল নেয়।
এসময়ে তারা জাকিরের মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখা হয়। বন্দী থাকা অবস্থায় তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও জানা যায়। এঘটনায় মাদ্রাসায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা এ পরিস্থিতিতে নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, মাদ্রাসায় না আসার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। জানা যায়, মাওলানা নাজমুল হাসানকে নুর হোসেন কাসেমী জীবদ্দশায় ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম হিসেবে ঘোষণা করে যান। কিন্তু উগ্রপন্থীরা মাওলানা নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে মাদ্রাসার সুষ্ঠু পরিবেশকে মেনে নিতে পারছিলেন না।
এদিকে মাওলানা নুর হোসেন কাসেমী তার জীবদ্দশায় ওসিয়ত করে গিয়েছেন তার পরিবারের কোন সদস্য বিশেষ করে তার ছেলে জাবের কাসেমী যেন এ মাদ্রাসার কোন পদে নিয়োগ না পায়। কিন্তু, একটা মহল নুর হোসেন কাসেমীর ওসিয়ত বরখেলাপ করে তার ছেলেকে ভুল বুঝিয়ে মাদ্রাসায় নিয়ে এসে মুহাদ্দিস হিসেবে বসিয়ে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারবিরোধীদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বারিধারা মাদ্রাসা দখলে নিয়ে ভবিষ্যতে হেফাজতে ইসলাম ও সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই হবে মুফতি মুনীর ও তার সহযোগীদের মূল লক্ষ্য। মাদ্রাসা দখলে সরকারবিরোধী প্রভাবশালী আলেমরা মুফতি মুনীরের সকল ধরনের অপকর্মে পৃষ্ঠপোষকতা করছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুহাদ্দিস বলেন, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে সহযোগী না হলে তাদেরকে অপমান করে মাদ্রাসা হতে বের করে দেয়া হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মাদ্রাসাটির অবস্থান কুটনৈতিক পাড়ায় বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছাকাছি হওয়ায় নিরাপত্তার দিক দিয়ে মাদ্রাসাটি অত্যন্তস্পর্শকাতর। বারিধারা মাদ্রাসায় কোন ধরনের উগ্রপন্থী কার্যক্রম বহিঃবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেয়ার পাশাপাশি এদেশকে জঙ্গীবাদী বা উগ্রবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রচার করার সুযোগ করে দিতে পারে।
উল্লেখ্য, মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদে যুদ্ধাপরাধী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি থাকায় মাদ্রাসাটির রেজিস্ট্রেশন এর আগেই বাতিল করা হয়েছে।