নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘুষ দেওয়ার মতো ফৌজদারি অপরাধে চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কুয়েতের কারাগারে বন্দি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের এমপি পদ বাতিল করে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংসদ সচিবালয়। সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয় গত ২১ জানুয়ারী কুয়েতের আদালতে ফৌজদারি অপরাধে চার বছরের সাজা হওয়ায় তার আসন শুন্য ঘোষনা করা হয়েছে।
এর আগে বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবালয়ে স্পিকার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় কুয়েত থেকে পাঠানো পাপুলের মামলার রায়ের কপি পর্যালোচনা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সংসদ সদস্যের বিদেশে আটক ও ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়ার পর পদ হারানোর ঘটনা এটিই প্রথম।
ঘুষ দেওয়ার দায়ে কুয়েতের আদালত জাতীয় সংসদের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে শাস্তি এখনো ঘোষণা করা হয়নি। গত বছর ৬ জুন কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পাপুলকে সেদেশে গ্রেপ্তার করে। তখন থেকে এমপি পাপুল কুয়েতের কারাগারে বন্দি। এই সাজা হওয়ার ফলে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) এবং ৬৭(১)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পাপুলের সদস্য পদ থাকতে পারে না। তাঁর আসন শূন্য হয়ে গেছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই জাতীয় সংসদের অভিভাবক হিসেবে স্পিকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আসন শূন্যের ঘোষণা দিতে হবে।
সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ নম্বর উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার বা সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি—(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’
আর সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হওয়া প্রসঙ্গে বলা আছে। এই অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ (১)-এ বলা হয়েছে, ‘কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি—(ঘ) তিনি এই সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে (২) দফার অধীন অযোগ্য হইয়া যান।’