নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) এর বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরা। তারা বলছেন মুলত চট্টগ্রামের উন্নয়নের গতি থামানোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতেই এই ষড়যন্ত্র। তবে ষড়যন্ত্রকারীদের জনগণ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন নেতা কর্মিরা। তিন তিন বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে কতিপয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মিথ্যা বানোয়াট ও মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করে তার সুনাম সুখ্যাতি নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও দাবি দলীয় নেতা কর্মি ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংগঠন ধারাবাহিক ভাবে নানান কর্মসুচিও পালন করেছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ও তাঁর ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হক চৌধুরী শারুনসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মহল মানহানিকর তথ্য পরিবেশন করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। হুইপের পরিবারের সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য চক্রটি নানা কল্পকাহিনী তৈরি করে গত বেশ কিছুদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তোলেন পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামসুজ্জামান চৌধুরী। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। এতে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাশেদ মনোয়ার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, অ্যাড. আবদুর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, জেলা পরিষদ সদস্য দেবব্রত দাশ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজন চক্রবর্ত্তী, আইয়ুব আলী, পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল, দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নুরুল হাকিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক চেয়ারম্যান, শাহাদাত হোসেন ফরিদ, মো. সেলিম চেয়ারম্যান, আবু ছালেহ চৌধুরী, আলমগীর খালেদ, এম এজাজ চৌধুরী, বেলাল উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মোরশেদ উল্লাহ, আবু সুফিয়ান টিপু, নাছির উদ্দিন, পৌরসভা আ.লীগ সভাপতি আলমগীর আলম, সাধারণ সম্পাদক এম এন এ নাছির, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান উল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক রিটন মাস্টার, পৌরসভা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
এসব অপপ্রচার পটিয়ার চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করার কৌশল বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেন, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী পটিয়ায় এ পর্যন্ত ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। পটিয়া এখন চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজেলার কাছে উন্নয়নের মডেল। একটি কমিটির মাধ্যমে শত বছরের পুরনো পটিয়া থানা মসজিদ উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ কমিটিতে হুইপ ও তাঁর ছেলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ জনসমক্ষে হুইপ ও তাঁর পরিবারের সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য নানা কল্পকাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। এর একটাই কারণ এ পরিবারের সম্মানহানির পাশাপাশি চলমান উন্নয়ন অগ্রগতিকে ম্লান করে দেয়া। এতে লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, হুইপ শামসুল চৌধুরী কোন দলছুট নেতা নয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত কর্মী। এ কারণেই তাঁকে পটিয়ায় তিন তিনবার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করার পর তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় মহান জাতীয় সংসদের হুইপ করা হয়েছে। শুধুমাত্র একটি শিল্প গ্রুপের সাথে হুইপের ছেলের ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে তাদের মালিকানাধীন মিডিয়াগুলো কল্পকাহিনী বানিয়ে অপপ্রচার করছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ পটিয়ার হাজারো নেতাকর্মী রুখে দাঁড়াবে বলে জানান তাঁরা।
এছাড়া সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের পক্ষ থেকে পটিয়া থানার মোড় চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তারা বলেন, যখই পটিয়ায় উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই একটি স্বার্থন্বেষী মহল পটিয়ার উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপকার জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে মেনে উঠেছে। পটিয়ার উন্নয়নকামী জনগণ তাদের এ ষড়যন্ত্র ও উস্কানী কোন সফল হতে দেবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ পটিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ মিয়া হাসানের সভাপত্বিতে ও সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আহমদের পরিচালনায় ঐ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামশুজামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, যুদ্ধকালীন কমন্ডার মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন চেয়ারম্যান, পটিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তিমির বরণ চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল খালেক, আবু ছালেহ চৌধুরী, এডভোকেট সৈয়দ নুরুল আবছার, চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন ফরিদ, এম এজাজ চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার এস এম মোরশেদ, এডভোকেট মো. বেলাল, পটিয়া পৌরসভা আওয়ালীগের সভাপতি আলমগীর আলম, সাধারণ সম্পাদক এম এন নাসির, বিএম জসিম উদ্দীন, মোহাম্মদ ইউনুছ, ওসমান আলমদার, মো. সাইফুল্লাহ্ পলাশ, মহিলা নেত্রী শিল্পী মিত্র, যুবলীগ আহবায়ক হাছান উল্লাহ, ইমরান উদ্দীন বশির, মোরশেদুল হক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর আলম, ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব সোহেল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় সংসদের হুইপ মনোনীত হন। স্থানীয় মানুষের কাছে জনপ্রিয় হওয়ায় তিনি বার বার নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য করতে চাননি জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে আমৃত্যু কাজ করেই সব ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে চান তিনি। হুইপ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে গ্রাম এখন শহর। অন্ধকার গ্রাম এখন আলোকিত। গ্রামের মানুষকে আর বৃষ্টির মধ্যে কাদা মাটি পেরিয়ে চলাচল করতে হয় না। শুধু পটিয়া উপজেলায় বিগত পাঁচ বছরে ৫ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এখনও অব্যাহত আছে সড়কের অনেক উন্নয়ন কাজ। করোনা মহামারির মধ্যেও সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত পটিয়া ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে পটিয়ার গরিব-দুঃখী দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করেছেন তিনি। দলীয় কর্মীরা প্রত্যেক বাড়িতে এই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেন।