খেলার প্রতি শেখ রাসেলের প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল: সহপাঠী লিটন চৌধুরীর স্মৃতিচারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেল ছিলেন আমার সহপাঠী, আমার খেলার সাথী। আমরা যখনই ঢাকায় আসতাম তখনই শেখ রাসেলের সঙ্গে খেলাধুলাসহ বিভিন্নভাবে সময় কাটাতাম। খেলার প্রতি রাসেলের প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল। ১৮ অক্টোবর শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে রোববার যুবলীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ বলেন, অনেক সময় আমাদের বাসা থেকে জোর করেই খেলার মাঠে নিয়ে যেতো। শেখ রাসেল, শেখ জুয়েল, আরিফ সেরনিয়াবাত ও আমি ছিলাম সমবয়সী। আজ রাসেল বেঁচে থাকলে অবশ্যই তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসতেন।

নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫-এর বেদনা আর শোককে শক্তিতে পরিণত করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যেভাবে আমাদের নেত্রী শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বিভিন্ন জেলায় জেলায় ঘুরে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছেন। ব্যক্তি থেকে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। ব্যক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, দলকে রাজনীতিকভাবে শক্তিশালী না করতে পারলে কোনো কিছু করার থাকবে না। দল শক্তিশালী হলে যেকোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবিলা করতে পারবো।

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বলেন; আজ শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে তিনি আওমীলীগের নেতৃত্বে থাকতো। পনের আগস্ট নিশংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ঘাতকরা মনে করেছিল আওয়ামীগীকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সেই দলকে সংগঠিত করে রাষ্ট্রক্ষমতায় এনেছেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেমন সম্ভব ছিলনা, তেমনি শেখ হাসিনা ছাড়াও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সম্ভব ছিল না।

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, দশ বছরের শিশু পৃথিবীর জঘন্যতম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল শহীদ শেখ রাসেল। আন্তর্জাতিক সমর নীতিতে শিশু হত্যা অন্যায় বলা হয়। তাকে সেদিন মানষিক নির্যাতন করেছে। মায়ের কাছে নিয়ে যাবার কথা বলে মা,চাচা,ভাই ভাবীর রক্তের ওপর দিয়ে হাটিয়ে নিয়ে গিয়ে মানষিক নির্যাতন করা হয়েছে। একান্তজন মানুষগুলোর রক্তাত্ব দেহগুলোর উপর দিয়ে নিয়ে গিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছিল; তাকে হত্যার আগে অনেকবার মানষিকভাবে হত্যা হরা হয়েছে। সর্বশেষ বুলেট দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। রাসেলের জন্য যে কোনো মানবিক মানুষের মায়া আসবে আর সে মায়া থেকে ঘৃনা আসবেই। এসময় তিনি রাসেলের গুনাবলি তুলে ধরেন যে সে কবুতরের মাংশ খেতো না, কারন সে কবুতর ভালোবাসতো তার খেলার সাথী। রাসেলের প্রিয়ছিল তার হাসু আপা। শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে সৎ, নিষ্ঠাবান,মানবিক দেশ দরদি মানুষ হতো কারন সে তো বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার সন্তান। ছোট্ট মানবশিশু শেখ রাসেলের দয়াবান,মানবতাবোধ, ছোট বয়সেই নেতৃত্বসুলভ আচরণ, পরোপকারী মনোভাবের অধিকারী ছিল।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় যুবলীগের পক্ষ থেকে অসহায়,ভূমিহীন মানুষকে গৃহদানের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যুবলীগই প্রথম সারাদেশে প্রায় ৩৫০ টি ঘর নির্মান করে দেয়ার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যার ফলশ্রুতিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বরে ১ম ধাপে ১০টি আশ্রয় কর্মসূচির ঘর উদ্বোধন করে আশ্রয়হীনদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয় এবং রোববার ২য় ধাপে ২১ টি ঘরের উদ্বোধন করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

Print Friendly, PDF & Email