সংসদ প্রতিবেদক:
সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি ক্রয়কৃত টিকার পরিমাণ জানালেও ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ জানাননি। তিনি উল্লেখ করেছেন, এ পর্যন্ত ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। নন-ক্লোজার এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কেনার কারণে সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদ তার তার লিখিত প্রশ্নে কত সংখ্যক টিকা সংগ্রহ করা হয়েছে সেটার পাশাপাশি এ জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে তা জানতে চান। লিখিত জবাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, চীন থেকে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ সিনোফার্ম, ৭ কোটি ৫১ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক, ভারত থেকে ৩ কোটি কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সের আওতায় ২ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার সিনোফার্ম, মোট ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। তিনি জানান, চীন, ভারত ও কোভ্যাক্স হতে সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সততা ও স্বচ্ছতার নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সিসিজিপি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে কেনা হয়।
সরকারী দলের সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে মোট ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিনের সংস্থান করা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বও পর্যন্ত ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪ ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৪ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫ হাজার ১৯০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, গত আগস্ট পর্যন্ত শনাক্তকৃত ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান ১২ হাজার ৫৯২টি। লাইসেন্সবিহীন দোকান শনাক্ত ও লাইসেন্স দেওয়া চলমান প্রক্রিয়া। ৫৫ জেলা কার্যালয় ও ৮ বিভাগীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত দোকান পরিদর্শন করেন। লাইসেন্সবিহীন দোকান শনাক্ত হলে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়।
বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক জানান, মাদক সেবীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে দেশের প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে পৃথক ইউনিট চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।
আওয়ামী লীগের সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে ওষুধের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রি প্রতিরোধে কঠোর সরকার। নকল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোবাইল কোর্টে এক হাজার ৭১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ১০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। তিনি জানান, ২০২১ সালের জানুয়ারি হতে নভেম্বর পর্যন্ত ৪৬টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্যে হোমিও ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ১৭টি, হার্বাল ওষুধ উৎপাদনকারী ৪টি, অ্যালোপ্যাথিক ৫টি, ইউনানি ৬ এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ১৪টি। একই সময়ে ১৪টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হয়।