রফিকুল ইসলাম সবুজ
বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক সময়ের আলো:
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সারা দেশের সব উপজেলায় প্রত্যেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে বিস্তৃত। তবে কাজের পরিধি অনুযায়ী মন্ত্রনালয় ও তার অধিনস্থ সংস্থাগুলোতে যে পরিমান জনবল প্রয়োজন ছিল তা না থাকায় সফলতার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা ছিল এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। তিনি এই চ্যালেঞ্জ সফলতার সঙ্গে মোকাবিলার পাশাপাশি মন্ত্রনালয়কে দূর্নীতিমুক্ত করতে পেরেছেন যা বড় সাফল্য। একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম আর দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার আজ দেশকে সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি তিন বছর ধরে জনবল সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে কিছুটা সংকট কাটানো সম্ভব হয়েছে। আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে শুন্য পদ গুলোতে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে। জনবল সংকট মোকাবেলা করা তার জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জ হলেও মন্ত্রনালয়ের কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে সহজ ভাবেই করতে পেরেছেন। দূর্নীতি বন্ধ করতে পেরেছেন এবং অত্যন্ত সততার সঙ্গে সবাই কাজ করছে। জনবল সংকট নিয়েও কর্মকর্তা কর্মচারিরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছে। যার জন্য তার মন্ত্রনালয় এ্যানুয়াল পারফরমেন্স এসেসমেন্ট এ ১১তম হয়েছে এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচি বাস্তবায়নে ৬ষ্টতম হয়েছে। এটা মন্ত্রনালয়ের বিশাল সাফল্য। কারন এক্ষেত্রে আগে এই মন্ত্রনালয় অনেক পিছিয়ে ছিল।
ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বড় ধরনের দুর্যোগে অনুসন্ধান ও উদ্ধারে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি)’ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় শিগগিরই এটির কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে চীন সরকারের সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। তিনি বলেন, চীনের আর্থিক সহায়তায় এনইওসি যদি আমরা করতে পারি তাহলে দুর্যোগ মোকাবেলায় তদারকির ক্ষেত্রে দ্রুত সতর্কতা করার কাজ আরও শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে টঙ্গীতে আমরা প্রায় সাড়ে ৮ একর জায়গা বরাদ্দ দিয়েছি হিউম্যানিটেরিয়ান স্ট্রেটেজিং এরিয়ার জন্য। আন্তর্জাতিক ভাবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুটি গুরুত্বপূর্ন কম্পোনেন্ট থাকে। একটি হচ্ছে এনইওসি এবং অন্যটি হিউম্যানিটেরিয়ান স্ট্রেটেজিং এরিয়া। এই এরিয়ার জন্য আমরা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগাম এর সঙ্গে যৌথ ভাবে কার্যক্রম শুরু করেছি। কিছু দিন আগে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগাম এর কান্ট্রি ডিরেক্টর জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন এবং তিনি বলেছেন দ্রশ তারা এটি করে দেবেন। স্ট্রেটেজিং এরিয়াটা হয়ে গেলে দুর্যোগের সময় যে মানবিক সহায়তা আসবে সেগুলো সেখানে রাখা এবং সেখান থেকে দুর্যোগপূর্ন এলাকায় বা সারা দেশে বিতরণ করা আমাদের জন্য সহজ হবে। সেখানে আমরা খোলা এরিয়ায় রাখবো যাতে সেখানে আহত রোগী ও মৃতদেহ রাখা যায়।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম আর দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার আজ দেশকে সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যে কোনো দুর্যোগে যথাযথ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস করে জনগণের জানমালের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশ্বব্যাপী দুর্যোগের ব্যাপকতা প্রমাণ করে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান কৌশল হওয়া উচিত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সব ধরনের দুর্যোগের প্রস্তুতিতে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্যোগ সহনীয় জাতি গঠনে কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণ ছাড়াও ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমাদেরকে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের কোন হাত নেই, কিন্তু আমরা যদি পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি তাহলে এসব দুর্যোগ মোকাবেলা করে টিকে থাকা আমাদের জন্য অনেক সহজ হবে। আর শেখ হাসিনার সরকার সে কাজটাই করে যাচ্ছে ।
ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, বজ্রপাতে মৃত্যু কমিয়ে আনার জন্য তিনটি ধাপে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সম্ভাব্যতা যাচাই এর জন্য দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হওয়ার পর বজ্রপাত নিরোধের জন্য কাজ শুরু করা হবে। এর একটি হলো আরলি ওয়ার্নিং সিস্টেম অর্থাৎ বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগেই সংকেত দেবে সেই যন্ত্র। দ্বিতীয়ত হল, বজ্রপাত-নিরোধক কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণ এবং তৃতীয়ত জনসচেতনতা বাড়ানো। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা ‘কমে আসবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বজ্রপাত ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে এতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে আমরা তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় প্রাথমিকভাবে ৭২৩টি যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগেই সংকেত দেবে যন্ত্রটি। তিনি বলেন, আমরা শহরের জন্য এ উদ্যোগ নিচ্ছি না। যারা খোলা মাঠে কাজ করেন বা মাছ ধরেন, তারাই বজ্রপাতে বেশি মৃত্যুবরণ করেন। তাদের জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ফলে মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে পারবে। এতে মৃত্যুর হার কমে যাবে বলে আমরা আশা করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে। এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে । এ লক্ষ্যে প্রায় ২৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বিভাগীয় ও জেলা শহরে অগ্নিকাণ্ডসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য উন্নত মানের লেডার(মই) ক্রয় করা হবে ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান দীর্ঘ কাল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এম.বি.বি.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে বি.সি.এস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনয়নে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ডাঃ এনাম দেশের বৃহত্তম বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ‘এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল’ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি স্পেকট্রাম গার্মেন্টস ধ্বস, তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ও রানা প্লাজা ধ্বসে হাজার হাজার আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে চিকিৎসা সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তিনি দুঃস্থ, বেওয়ারিশ ও হত-দরিদ্র রোগীদের জন্য বিশেষ চিকিৎসা সেল চালু করে সমাজ সেবায় নিয়োজিত আছেন। এ লক্ষ্যে তিনি ‘এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ গঠন করেন। তিনি নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহতদের সেবায় বিশেষ মেডিকেল টিম প্রেরণ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি চিকিৎসক দল কক্সবাজারে আশ্রিত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। তিনি ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ১৫৬ টি স্যাটেলাইট চিকিৎসা কেন্দ্র পরিচালনায় অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও ১৯৯৮, ২০০৪, ২০০৭ এর বন্যায় স্বেচ্ছা চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছেন। তিনি ১৯৮৯ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়াতে সংঘটিত হওয়া প্রাণঘাতি টর্নেডোতে আক্রান্তদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। ডাঃ এনাম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এবং শিশু অধিকার ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক পার্লামেন্টারি ককাস এর সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া তিনি ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এবং ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর আজীবন সদস্য। তিনি প্রাইভেট হসপিটাল ওনার্স এসোসিয়েশন অব সাভার (ফোয়াস) এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশন এর মহাসচিব হিসেবে নিয়োজিত আছেন। ডাঃ এনাম ‘দেশ ও কৃষ্টি’ বইয়ের প্রকাশনা নিষিদ্ধকরণের ঘোষণা এবং বইটি অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে তৎকালীন গভর্নর নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে সাংগঠনিক ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৬৯-এ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে ১১ দফার ভিত্তিতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেন।
ডা. এনাম ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং নির্বাচন পরবর্তিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকহানাদার, রাজাকার, আলবদর ও সহযোগী বাহিনীদের উর্দূতে লেখা চিঠিপত্র বাংলায় অনুবাদ করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শত্রুদের পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য অবদান রাখেন।
ডা. এনাম দায়িত্ব গ্রহনের পর পাল্টে যায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় ও অধিনস্থ সংস্থাগুলোর চেহারা। নারী ক্ষমতায়ন উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এসডিজি অর্জনে জেন্ডার-রেসপন্সিভ সেবা’ ক্যাটাগরিতে ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক ২০২১’ পায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এই পদক গ্রহণ করেন।
স্বেচ্ছাসেবায় নারী নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য ‘সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক নির্দেশিকা ২০২১’ এ বিশেষ বিধান সৃষ্টি করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় সিপিপির ৭৬ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছে, যার অর্ধেক নারী। সিপিপির প্রশিক্ষিত ও উপকরণে সজ্জিত নারী স্বেচ্ছাসেবকরা বর্তমানে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত হয়েছে। নারী স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে উপকূলীয় এলাকায় বিশেষত নারীদের মধ্যে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি, নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা লক্ষ্যণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’ যেই নারীদের দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবা হতো, তারাই আজ দুর্যোগ মোকাবিলায় অর্ধেক শক্তি। ‘গৃহিনী’ থেকে ‘সাড়াদানকর্মী’ হিসেবে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সিপিপি নারী স্বেচ্ছাসেবকরা ‘পরিবর্তনের দূত’ হিসেবে কাজ করছে, যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জেন্ডার-রেসপন্সিভ টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবেই জাতিসংঘ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক ২০২১’ দেয়।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড হলো জনসেবায় শ্রেষ্ঠত্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এটি জনসেবা প্রতিষ্ঠানের সৃজনশীল সাফল্য এবং অবদানের স্বীকৃতি দেয়, যা বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে আরও কার্যকর এবং সেবামূলক জনপ্রশাসনের দিকে পরিচালিত করে। জাতিসংঘের পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড জনসেবার ভূমিকা, পেশাদারিত্ব এবং দৃশ্যমানতা প্রচার করে।