নিজস্ব প্রতিবেদক: অনিয়ম ও দুর্নীতিতে কোনভাবেই থামছেন না তিনি। বহুল আলোচিত পাবনার রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘বালিশ-কাণ্ড’ দুর্নীতি মামলার অন্যতম আসামী গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-১ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আশরাফুল ইসলামের আকণ্ঠ দুর্নীতি এখন গণপূর্তের সবচে’ আলোচিত বিষয়। এতো অনিয়ম ও দুর্নীতির পরেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবনসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দায়িত্বে বহাল রয়েছেন তিনি।
রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় পদে পদে দুর্নীতি হয়েছে। এ প্রকল্পের দূর্নীতির অন্যতম হোতা ই/এম এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলামসহ ৭ জন প্রকৌশলীকে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদক তলব করেছিল। রূপপুর কান্ডে বেশ কয়েক জন প্রকৌশলী দুদক এর তলবে হাজির হওয়া এবং জেল খাটলেও আশরাফুল ইসলাম কৌশলে দুদক এর তলবে হাজির না হয়ে পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিন নেন। এই মামলা থেকে রেহাই পেতে জোরালো তদবির অব্যাহত রেখেছেন তিনি। বালিশ কেলেঙ্কারির কারনে এই প্রকৌশলীর পদোন্নতি আটকে আছে। তার জুরিয়র কর্মকর্তারা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পেলেও তিনি এখনো নির্বাহী প্রকৌশলী রয়ে গেছেন। সাধারণত কোন কর্মকর্তা একই দপ্তরে তিন বছরের বেশি দিন দায়িত্বে থাকতে পারেন না। কিন্তুু আশরাফুর ইসলাম ই/এম-১ এর দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় ৫ বছর ধরে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজের ৬৫ থেকে ৬০ শতাংশ টাকা নিয়ে কাজ না করে বিল দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া একই কাজ একাধিক নামে করিয়ে বিল দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশেষ করে গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কোন ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও কাজের স্থান ঠিকাদারকে দেখায় না। টেন্ডারের পর কাজের মোট মুল্যের ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ টাকা ঠিকাদারদের কাছ থেকে নিয়ে কাজ সম্পন্ন দেখায়। গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করলে এসএসএফ ও নিরাপত্তার ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারদের কাজের স্থান দেখায় না বা সেখানে যেতে দেয় না। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদাররা জানেও তারা কোথায় কাজ করেছে বা আদৌ কাজ হয়েছে কিনা। এভাবে একই কাজ একাধিক ঠিকাদারের মাধ্যমে বিল নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এসব কারনে ভিভিআইপি এলাকায় ই/এম এর কাজ নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলে সংস্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ই/এম এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো: আশরাফের দূর্নীতি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে দাবি জানিয়েছেন সংস্লিষ্টরা। অভিযোগের বিষয়ে মো: আশরাফের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।