সংসদ প্রতিবেদক :
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটসহ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৯২ হাজার কোটি টাকা (১ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বাজেট সাপোর্ট সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯ জনিত অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৪৬ হাজার কোটি টাকা (৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে সংগ্রহের কথাও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের জামালপুর-৫ আসনের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটসহ ভবিষ্যৎ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১ হাজার মিলিয়ন (১ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ‘বাজেট সাপোর্ট’ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বাজেট সাপোর্ট শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান এবং সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে। এর পাশাপাশি কোভিড মহামারীজনিত অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী অর্থবছরে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ‘বাজেট সাপোর্ট’ হিসেবে গ্রহণের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের সুপরিকল্পিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্ন পরিকল্পনাসহ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত সারা দেশের ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৩৪০ জন গৃহহীন পুনর্বাসিত হয়েছে। এর মধ্যে ব্যারাক হাউজ নির্মাণের মাধ্যমে এক লাখ ৬৮ হাজার ৪৮টি পরিবার, নিজ জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে এক লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩ পরিবার, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সাত হাজার ৯২টি ঘর, আম্ফান ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার একশ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। সারা দেশে গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের ‘মাথা গোঁজার ঠাই নাই’ এ কথাটি চিরতরে বিলুপ্ত করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।
আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে উৎপাদন বেড়ে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ধান ও সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আম ও আলু উৎপাদনে ৭ম, চা উৎপাদনে ৪র্থ, ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে প্রথম। আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ৪৩টি জেলা রেল যোগাযোগের আওতায় রয়েছে। রেলওয়ের যেসব প্রকল্প চলমান, তা বাস্তবায়িত হলে আরও ১৯টি জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। আর ৩০ বছরব্যাপী মাস্টার প্লান সম্পন্ন হয়ে বাকি চারটি জেলাও রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।