উইঘুর মুসলিম গণহত্যা, আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
চীনের জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে মুসলিম উইঘুরদের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন মিলনায়তনে ‌‌চীনের উরুমকিতে উইঘুর মুসলিম গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে শান্তিময় বিশ্ব গড়তে মানবতা, রুখবে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, গণহত্যা ও সাম্প্রদায়িকতা শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান বক্তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আল্লামা আতাউর রহমান মিয়াজী বলেন, ২০০৯- সালের আজকের দিনে সারা বিশ্বে উইঘুর মুসলমানদের উরুমকি দাঙ্গা ও গণহত্যার বার্ষিকী পালন করছে। চীন সরকার আনুমানিক ১.৫ মিলিয়ন লোককে আটক করে সংশোধনের নামে নির্যাতন নিপীড়ন করছে।

চীনের সংখ্যালঘু মুসলিম নিপিড়নের বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিমকে সোচ্চার হতে হবে। উরুমকিতে মুসলিম গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে চীন সরকারের বিচার করতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বলেন, চীন সরকার উইঘুরে মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের কোনো পুরনো মসজিদ সংস্কার করতে না দেয়া।

নতুন মসজিদ নির্মাণের অনুমোদন না দেয়া। বৌদ্ধমন্দিরের আদলে সংস্কার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই কেবল পুরনো মসজিদ সংস্কারের অনুমোদন মেলে। মুসলিমদের পবিত্র হজকে পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

মসজিদে মুসলিমদের জুমআর নামাজ আদায় নিয়মিত বাধা প্রদান করা হচ্ছে। উরুমকির উইঘুর মুসলিমদের ইসলামি সাংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করতে চীন সরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। মুসলিম যুবকদের বৌদ্ধ মেয়েদের বিয়ে করতে অর্থের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। মুসলিম গর্ভবর্তী নারীদের অবৈধভাবে গর্ভপাত করানো হচ্ছে।

আবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছেলেদের কাছে মুসলিম মেয়েদের জোরপূর্ব বিয়ে দেয়া হচ্ছে। ১৮ বছরের নিচে, শিশু-কিশোরদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

জিনজিয়াংয়ে মুসলমানদের তুর্কি ভাষা ও আরবি বর্ণমালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জিনজিয়াংয়ের ৫০টির মতো পুরনো মসজিদ সীলগালা করে দিয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, যেখানে সংখ্যা গুরু রয়েছে তারা সংখ্যালঘুকে হামলা করে অত্যাচার চলছে। ফিলিস্তিনের পরে চীনের মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। তাদের মধ্যে উপযুক্ত নেতৃত্ব নেই বলে এই অবস্থা।

চীনের শাসকগোষ্ঠী মুসলিমদের নিধন করতে চায়। চীনে সাড়ে তিন কোটি মুসলমান, চীনের মুসলমান হত্যার বিরুদ্ধে আমাদেরকে প্রতিবাদ জানাতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন, ঢাকা ক্যান্টনম্যান্ট মুসলিম মর্ডান একাডেমি সিনিয়র ধর্মীয় শিক্ষক ফজলে রাব্বি ফরহাদ, চেয়ারম্যান সুফিবাদ রিসার্চ ফাউন্ডেশন শায়েখ আল্লামা মুহিউদ্দীন খান ফারুকী, সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার সমীরণ রায়, এনডিপির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সমন্বয়ক রাহাত হুসাইন, শেখ জনি ইসলাম প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email