গণপূর্তে পদোন্নতির আগেই একই পদে আরেকজনকে বদলী!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
একটি পদে দুইজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলীর ঘটনার পর এবার একজন উপ-সহকারি প্রকৌশলীর পদোন্নতির প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর পর পদোন্নতি হওয়ার আগেই তার কর্মস্থলে অন্য একজন কর্মকর্তাকে বদলী করার ঘটনা ঘটেছে আলোচিত গণপূর্ত অধিদপ্তরে। বদলী বানিজ্যের কারনেই এমন ঘটনা বার বার ঘটছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা।

গত ৪ জুলাই কুমিল্লা গনপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ হোসেনকে ঢাকার গণপূর্ত ই/এম সার্কেল-২ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ এর স্থলে বদলী করা হয়। বদলী আদেশে বলা হয়েছে পদোন্নতি হওয়া সাপেক্ষে মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ এর পদ শূন্য হওয়ার পর বদলী আদেশটি কার্যকর হবে।

সংস্লিষ্টরা জানান, পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠানোর পর তা অনুমোদন হওয়ার আগেই ঐ পদে আরেকজনকে বদলী করার পেছনো মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। তা না হলে ঢাকার বাইরে থেকে কেন হঠাৎ একজনকে বদলী করা হলো যে পদে এখনো পদোন্নতি হয়নি। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. নাছিম খান এবং গণপূর্তের বদলী বানিজ্যের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট আরও বেশ কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলী করেছেন। অভিযোগ রয়েছে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাসিম খান নিজে মেট্রোপলিটন জোনে বদলী হওয়ার খরচ তোলার জন্য উপ-সহকারি শেখ মোহাম্মদ হোসেনকে এবং অন্য আরও তিন জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে সুবিধাজনক কর্মস্থলে বদলীর ব্যবস্থা করেছেন। প্রধান প্রকৌশলী একই ব্যাচের এবং ঘনিষ্ট বন্ধু হওয়ায় তিনি এই সুযোগ নিয়েছেন।

অন্যদিকে গনপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু আগামী ২৮ জুলাই এলপিআর এ যাবেন। অথচ এলপিআরএ যাওয়ার ২৩ দিন আগে গত ৫ জুলাই অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাছিম খানকে ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে বদলী করা হয়েছে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. নাছিম খান এবিষয়ে জানান, বদলীর ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম বা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। পদ শূন্য হওয়ার আগে এধরনের বদলীর রেওয়াজ আগেও রয়েছে।

এর আগে গত ২৬ মে এক আদেশে ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলী করেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। তখন আশ্চর্যের বিষয় ছিল আদেশে গুরুত্বপূর্ন সংসদ ভবন এলাকার গণপূর্ত ই/এম কাঠের কারখানা বিভাগে একটি পদে দুই জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলী করা হয়েছিল। ই/এম ঢাকা- ১০ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. সাজেদুল ইসলামকে কাঠের কারখানা বিভাগে বদলী করার পাশাপাশি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তরিকুল আলমকে কাঠের কারখানা বিভাগে সংযুক্তিতে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয় আদেশে। এক পদে দুইজনকে দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনায় হতবাক হন অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা। তারা বলছেন, বদলী বানিজ্যের কারনেই এমনটা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email