বিসিএসে প্রথম হয়েও রেলের ডিজি হতে না পারায় বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
১০ম বিসিএসে রেলওয়ের দুই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে পিএসসির মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) হতে পারেননি এক কর্মকর্তা। তাকে ডিঙিয়ে তার জুনিয়র কর্মকর্তাকে ঐ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংস্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়েতে মহাপরিচালক নিয়োগ করা করা হয় জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে। পিএসসির মেধা তালিকা অনুযায়ী সেই জেষ্ঠ্যতার তালিকায় বিদায়ী ডিজির পরেই ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (রোলিং স্টক) দায়িত্বে থাকা মো. মঞ্জুর- উল- আলম চৌধুরীর অবস্থান। কিন্তুু আমলাতন্ত্রিক জটিলতায় দ্বিতীয় গ্রেড এ পদোন্নতি আটকে থাকায় তার পরিবর্তে বিসিএস দশম ব্যাচের তার জুনিয়র কর্মকর্তা কামরুল আহসানকে (এডিজি অবকাঠামো) গত ৮ ডিসেম্বর ডিজির চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে এই দায়িত্ব দেওয়ার কয়েক দিন আগে মঞ্জুর- উল- আলম চৌধুরীর আটকে থাকা পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছিলেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। যদিও কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়ে রেলমন্ত্রীর এমন চিঠির ঘটনায় সমালোচনাও হয়েছে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন লিখেছিলেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) (চলতি দায়িত্বে) মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী ১০ম বিসিএসে রেলওয়ের দু’টি ক্যাডারে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে পিএসসির মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী এবং মহাপরিচালকের পর তিনিই জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা। সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড- এসএসবি ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় মো. মঞ্জুর-উল আলমকে গ্রেড-৩ এর ফিডার পদে ১ বছর ৫ মাস ১৩ দিন চাকরি অভিজ্ঞতার শর্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পরিমার্জন সাপেক্ষে গ্রেড-২ এ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তাতে ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর সেই সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেন। এর একদিন পরে ২৭ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। তিনি ২০২০ সাল থেকে দ্বিতীয় গ্রেডে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও বেতন ভাতার সুবিধা পান তৃতীয় গ্রেডের। এই কর্মকর্তার পদোন্নতি না হওয়ায় রেলওয়ের জেষ্ঠ্যতা বিঘ্নিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। তিনি আরো লেখেন, ‘করোনাকালীন কেনাকাটায় এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হলেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ ওই কর্মকর্তাকে পদোন্নতি না দিয়ে তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য বলা হয় চিঠিতে। কিন্তুু রেল মন্ত্রীর চিঠির পর বিষয়টির সুরাহা হওয়ার আগেই মন্ত্রনালয় থেকে ডিজি হিসেবে আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এবিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী বলেন, ২০২০ সালে দশম বিসিএস’এর মোস্ট সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে দ্বিতীয় গ্রেডে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হলে পদোন্নতি ঠেকানোর জন্য একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে হয়রানি করে। তবে দুদক তদন্ত করে অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছে। তার পরও পদোন্নতি না হওয়া দু:খজনক।

এবিষয়ে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী একজন দক্ষ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তার পদোন্নতি না হওয়ায় রেলওয়ের জেষ্ঠ্যতা বিঘ্নিত হয়েছে। একইসঙ্গে পদোন্নতি না দিয়ে তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *