সিন্ডিকেটে জিম্মি বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনে ভোট নেই এক যুগ ধরে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রায় ১ যুগ ধরে বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনে কোন ভোট হচ্ছে না। এ নিয়ে সাধারণ কর্মকর্তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিগত ২০০৯ সালে কর্মকর্তাদের সরাসরি ভোটে বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছিল। এরপর থেকে কখনো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, কখনো কন্ঠ ভোটে, কখনো কোন অফিস আদেশে কার্যক্রম চালিয়েছে বছরের পর বছর। ফলে এক যুগ ধরে কোন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি সাধারণ কর্মকর্তারা। 

জানা যায়, বিগত ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচিত হন/এসোসিয়েশনের কমিটি গঠিত হয়। এরপর ২০১৩ এবং ২০১৬ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কমিটি গঠন করা হয়। বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্রের ধারা-১০ অনুযায়ী “এসোসিয়েশনের কর্মকান্ড সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য এবং সংগঠনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার নিমিত্তে ০২ (দুই) বৎসরের জন্য সাধারণ পরিষদের মাধ্যমে কার্য নির্বাহী পরিষদ গঠিত হবে”। গঠনতন্ত্রের ধারা-১১ অনুযায়ী “এসোসিয়েশনের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য নির্বাচিত/মনোনীত ০২ (দুই) বৎসর মেয়াদের ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কার্য নির্বাহী পরিষদ থাকবে।

২০১৬ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সভা ২০২২ সালের ০৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। সে মোতাবেক ২৩ অক্টোবর ২০২২ বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক মো: সাইফুল ইসলামকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে মোট পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালের ০১ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর’২২ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দুইটি প্যানেল প্রধানের ঘোষণাসহ প্রচারনা যখন জমে উঠেছিল তখন (০৯ নভেম্বর’২২) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক) মো: সাইফুল ইসলাম ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল অনিবার্য কারণ বশত: স্থগিত করেন। এ ঘোষণায় কর্মকর্তাদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করে।

গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগ) স্বাক্ষরিত বিআইডব্লিউটিএ’র এক দপ্তর আদেশে প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো: মহিদুল ইসলামকে আহবায়ক, নিরীক্ষা বিভাগের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমানকে সদস্য, ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদারকে সদস্য, বন্দর ও পরিবহন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এ.কে.এম আরিফ উদ্দিনকে সদস্য এবং প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম শাহেদ রেজা’কে সদস্য করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গঠনতন্ত্রে আহবায়ক কমিটি গঠনের কোন বিধান উল্লেখ নাই। এছাড়া উক্ত দপ্তর আদেশে আহবায়ক কমিটির নির্দিষ্ট কোন মেয়াদের কথা উল্লেখ না থাকলেও নতুন পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আহবায়ক কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে উল্লেখ করা হয়। সাধারণত আহবায়ক কমিটি বা এড-হক কমিটির মেয়াদ হয়ে থাকে ৯০ দিন। সেদিক থেকে বর্তমান আহবায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ। বিআইডব্লিউটিএর দপ্তর আদেশ মোতাবেক গঠিত আহবায়ক কমিটি ৪ মাসে সাধারণ কর্মকর্তাদের সাথে কোন সভা না করলেও ০৩ মে শুধুমাত্র বিভাগীয় প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করেন। গত ৩০ এপ্রিল আহবায়ক মহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত মতবিনিময় সভার নোটিশের বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ কর্মকর্তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাধারণ কর্মকর্তাদের দাবী, তারা একটা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন না। অবিলম্বে তারা এই জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে উন্মুক্ত নির্বাচন প্রদানের দাবী জানিয়েছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *