ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিরাপত্তায় রেট্রোফিটিং প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেছেন ভুমিকম্প দুর্যোগ ঝুকি হ্রাসে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। বুধবার রাজধানীর পূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে “তুরস্কে সংগঠিত ভূমিকম্প থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশে ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে করণীয়, বিএনবিসির প্রয়োগ এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন সরকার নিরাপদ নগরী গঠনের লক্ষ্যে ভূমিকম্প জনিত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত অধিদপ্তর ঝুকিপূর্ণ ভবনসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রেট্রোফিটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে, প্রয়োজনীয় কারিগরী ম্যানুয়েল প্রণয়ন করেছে এবং বিভিন্ন স্তরের প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল কোড কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট ড. সত্যেন্দ্র কুমার ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক আব্দুল লতিফ হেলালী। সেমিনারে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার শতাধিক প্রকৌশলী অংশগ্রহণ করেন।

ভুমিকম্প দুর্যোগ ঝুকি হ্রাসে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মেনে চলার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ঝড়-বৃষ্টি এবং টর্নেডোর মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতি ১০০-১৫০ বছরের ইতিহাসে দেশ বড় ধরনের ভূমিকম্পে আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ১৮৯৭ সালের গ্রেট আসাম ভূমিকম্পসহ অনেক বড় ভূমিকম্পের সম্মুখীন হয়েছে। কোন ধরনের পূর্বাভাস ছাড়া ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে বলে বড় মাত্রার যেকোনো ভূমিকম্প ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে। তাই এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সর্বোত্তম উপায় হল ভবনগুলোকে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভূমিকম্প সহনীয় করে ডিজাইন করে শক্তিশালী করা। নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সিসমিক ডিজাইন পদ্ধতি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। পুরনো দুর্বল ভবনের ক্ষেত্রে যথাযথ সিসমিক রেট্রোফিটিং করা উচিত।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন ভবিষ্যতে আমাদের দেশে তুরস্কের মত ভয়াবহ দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে আইনের প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এ ব্যপারে আইনের কঠোর প্রয়োগের ওপর সরকার গুরুত্বারোপ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে চলমান বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকিহ্রাস করে বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়া সম্ভব হবে বলে প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Print Friendly, PDF & Email