দীর্ঘ প্রতিক্ষীত ‘চিলমারী-রৌমারী’ রুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চিলমারী উপজেলার রমনা ফেরিঘাটে ‘চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন এবং চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির ‘কুঞ্জলতা’ ফেরি দিয়ে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারী (রমনা) ফেরিঘাটে উদ্বোধন করেন। এর ফলে ব্রম্মপুত্র নদ বিধৌত রৌমারী-রাজীবপুর উপজেলার মানুষদের জেলা শহরে যাতায়াতে ভোগান্তি কমে আসবে বলে মন্ত্রনালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শুধু চিলমারী-রৌমারী রাজিবপুর নয়, কুড়িগ্রামের সাথে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে। পরবর্তিতে আরো একটি ফেরি এ রুটে যুক্ত হবে। উক্ত ফেরি রুটের নাব্যতা বজায় রাখার জন্য দু’টি ড্রেজার থাকবে। ফেরি সার্ভিস চলাচলের মধ্য দিয়ে নদী পথে যোগ হলো যোগাযোগের সতুন মাত্রা।

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে অবদান তা কেড়ে নেওয়া যাবেনা। ১৫ বছর যাবত ফখরুলরা বলছেন- সরকারকে ফেলে দিচ্ছে; কিন্তু তারা সেটা পারেনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা দেখে যান। সুস্থ থাকুন। কুড়িগ্রামের বাসন্তীকে নিয়ে যারা দুর্ভিক্ষের চিত্রধারণ করেছে; তারা তাদের ফায়দা নিয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করেনি। শেখ হাসিনা বাসন্তীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, তাকে ঘর দিয়েছেন। অন্যরা দিতে পারিনি। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোমারীকে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান শাহীন, চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম লেছু, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী শোভন, প্রকল্প পরিচালক সাজিদুর রহমান । নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী চিলমারী-রৌমারী ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন শেষে তিনি ফেরিযোগে রৌমারী গিয়ে ফেরিঘাট উদ্বোধন করেন। চিলমারী নদীবন্দর উন্নয়নে ২৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে এর কআর্যক্রম শেষ হবে।

উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র নদ জেলার রৌমারী-রাজীবপুর এ দুই উপজেলাকে আলাদা করে রেখেছে। এ দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে জেলা শহরে যাতায়াত করতে একমাত্র নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে অনেক ঝুঁকি নিয়ে তারা জেলা শহরে আসেন নৌপথে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে আটকে যায় নৌকা। ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না তাদের। ফেরি চলাচল করলে কমে আসবে ভোগান্তি। চিলমারী-রৌমারী নৌপথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এ পথের দৈর্ঘ্য ১৩-১৪ কিলোমিটারে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে বিআউডব্লিউটিএ।

ভাড়া হলো অর্ধেক : চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল উদ্বোধনের দিন চিলমারী বন্দরে এক সুধি সমাবেশে ফেরির ভাড়া কমানোর দাবি উঠে। সুধি সমাবেশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ফেরি পারা পারের ভাড়া কমানোর দাবি তুলেন। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “চিলমারী-রৌমারী রুটে শুরু হলো ফেরি চলাচল শুরু হচ্ছে। আজকে বিআইডব্লিউটিসির ‘কুঞ্জলতা’ ফেরি দিয়ে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। “এখানে ভাড়া কমানোর একটা দাবি রেখেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আমি সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তাবিত ভাড়া থেকে কমিয়ে সিএনজি চালিত বেবী ট্যাক্সি/অটোরিক্সা ৬৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা, মটর সাইকেল ২২০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা, বাই সাইকেল ১২০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা, জনসাধারণের জন্য প্রস্তাবিত ৮০ টাকা কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।” তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা ও এম্বুলেন্স এর কোন ভাড়া লাগবে না। এ ছাড়া অন্যান্য যানের ক্ষেত্রে ভাড়া শতকরা পনের ভাগ কমানো হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *