খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর প্রতি এবারও আস্থা রাখছে আওয়ামী লীগ : দিনাজপুর-২ আসন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক নেতা নির্বাচন করতে চান। আর দল নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি থেকেও মনোনয়ন চাইবেন একাধিক নেতা। তবে টানা তিন বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করায় সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরাও তার পক্ষে রয়েছেন। ফলে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দলের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক পাবেন বলে আশাবাদী নেতা কর্মিরা। দল খালিদ মাহমুদ এর প্রতি এবার আস্থা রাখছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় সংসদের ৭ নম্বর সংসদীয় আসন (দিনাজপুর-২) গঠিত হয়েছে বিরল-বোঁচাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে। এই আসন থেকে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের আনিছুল হক। দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার বার আওয়ামী লীগের সতীশ চন্দ্র রায় নির্বাচিত হন। চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির রিয়াজুল হক এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মাহবুবুর রহমান নির্বাচিত হন। তবে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে দিনাজপুর-২ আসনে (বিরল-বোঁচাগঞ্জ) মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ দলের ব্যানার নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমানকে হারিয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির ধানের শীষ মার্কার প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরীকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর পিতা সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আবদুর রৌফ চৌধুরী সপ্তম জাতীয় সংসদে দিনাজপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন মরহুম আব্দুর রৌফ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বিশিষ্ট রাজনৈতিক এবং সমাজ সেবক হিসেবে খ্যাতিমান। ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সান্নিধ্যে আসেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বৃহত্তর দিনাজপুর (ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা আন্দোলন এবং ৬৬তে ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে বাংলাদেশের সরকার প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহম্মেদ এর দূত হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যান, ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করার পর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেণ এবং ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব ছিলেন, এ সময়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য নির্বাচিত হন। মরহুম রৌফ চৌধুরীর মতো তার সন্তান খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও এলাকায় খুব জনপ্রিয়। ক্লিন ইমেজ থাকায় তাই এবারও তার মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন দলীয় নেতা কর্মিরা।
তবে এই আসন থেকে আরেকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা সতীশ চন্দ্র রায়ের ছেলে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. মানবেন্দ্র রায় মানব।

অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, বোঁচাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ ছাড়া এই আসন থেকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলামও মনোনয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দিনাজপুর-২ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত খালিদ মাহমুদ চৌধুরী চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বিরল স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়কের সম্প্রসারণ, কৃষকের চাষাবাদের স্বার্থে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ, বাঁধ নির্মাণ, স্কুল-কলেজ ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ, উপজেলা পরিষদের ভবন নির্মাণ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *