সংসদ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রোধ করতে একটি দুষ্টচক্র দেশে-বিদেশে সরকার এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি আরো জানান, ওই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো কাজ করছে। রকার দলীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর লিখিত প্রশ্নের জবাবে বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রী লিখিত জবাবে জানান, নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পদ্মা রেল লিংকসহ বিভিন্ন অবকাঠামো বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মুকুটে নতুন নতুন স্বর্ণপালক যুক্ত করেছে। বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের জনগণ বহুমুখী অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছেন।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশের ইতিবাচক অগ্রযাত্রায় গতিরোধ করতে বহিঃর্বিশ্বে ও বাংলাদেশে অপপ্রচারকারীদের একটি দুষ্টচক্র সরকার এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ সব দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা কাজ করছে। তিনি আরো জানান, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন মিডিয়ায় নিয়মিতভাবে তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশের এবং কনটেন্ট প্রচারের বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহ নানা রকম সভা বা আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজনের আধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সচেতন করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও হীন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রবাসে জনমত গঠন করা হচ্ছে।
ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান জানান, যেসব অসত্য বা বিকৃত খবর ও গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয় সেগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে আলোচনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও মিডিয়াসহ বিশ্ববাসীকে অবহিত করা হচ্ছে। গুজব ও অপপ্রচাররোধে ১৫টি প্রতিবেদন, ৭২টি তথ্যবিবরণী এবং ১টি প্রেসনোট জারিসহ ৭টি ফিচার তথ্য অধিদফতর থেকে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরএনপিপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেযাদ আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পের ১ম পর্যায় উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ জুলাই ২০১৬ হতে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৯২.৯১ কোটি টাকা। সরকার এবং রাশান ফেডারেশন সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় ঋণচুক্তির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।