নিজস্ব প্রতিবেদক:
আলুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন উচ্চফলনশীল জাতের আলুর চাষ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, আমাদের দেশে চাষাবাদে থাকা বর্তমান জাতগুলো অনেক পুরনো হয়ে গেছে ও ফলন কম। তাছাড়া বর্তমানে সরিষা, ভুট্টা ও বোরো আবাদ বৃদ্ধির কারণে আলুর আবাদ কম হচ্ছে। এর ফলে বর্তমানে আলুতে কিছুটা ঘাটতি হচ্ছে। এই অবস্থায়, নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো দিয়ে কমফলনশীল জাতগুলো রিপ্লেস করতে পারলে কম জমিতেও আমাদের প্রয়োজনীয় আলু উৎপাদন করা যাবে এবং রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। রোববার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পারেরটং গ্রামে বিএডিসি আলু-১ বা সানশাইন জাতের আলুর মাঠ পরিদর্শন ও চাষীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, আলু বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। বাংলাদেশে ৪ দশমিক ৫৬ লাখ হেক্টর জমিতে মোট ১ কোটি ৪ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়; ফলন গড়ে হেক্টরপ্রতি প্রায ২৩ টন।
অনুষ্ঠানে বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক উম্মে ফারজানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তালেব বক্তব্য রাখেন।
মানসম্পন্ন বীজআলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক আবীর হোসেন জানান, এ প্রকল্পের আওতায় বিএডিসির খামারে বিগত তিন বছরে ট্রায়ালে আলুর জীবনকাল, ফলন, শুষ্ক পদার্থের পরিমাণ, পুষ্টিগুণ ও দেশিয় আবহাওয়ায় চাষাবাদের উপযোগিতা বিচারে উৎকৃষ্ট মানের ১৪ টি জাতের আলু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিএডিসি’র নামে নিবন্ধন করা হয়। এর মধ্যে বিএডিসি আলু ১ (সানসাইন), বিএডিসি আলু ৬ (কুমবিকা), বিএডিসি আলু ৭ (কুইনএ্যানি), বিএডিসি আলু ১২ (রাশিদা), আগাম এবং রপ্তানি উপযোগী জাত যার হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৪০ মেট্টিক টনের উপরে। বিশেষ করে বিএডিসি আলু ১ (সানসাইন) জাতটি খুবই সম্ভাবনাময়। এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪২-৪৫ মেট্রিক টন। স্বল্প জীবনকাল, ৬৫ দিনেই বাজার উপযোগী হয়। ৪ থেকে ৫ মাস ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। সাইজ ও কালার আকর্ষণীয়। এবং এটি আগাম উৎপাদন করা যায়। ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষাপটে বিএডিসি গতবছর ৪ হাজার ২০০ মেট্টিক টন সানসাইন জাতের বীজআলু চাষিদের মধ্যে বিতরণ করেছে। এ বছর সেটা দ্বিগুণ অর্থাৎ ৮ হাজার মেট্রিক টন সরবরাহের জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে প্রকল্প পরিচালক জানান।