নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় সংসদ ভবনের নীচতলায় লাইব্রেরীর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ। সেখানে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার বিভিন্ন ছবি ও ডকুমেন্ট। ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গণপূর্ত অধিদফতরের শেরেবাংলা নগর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, খুব শিগগিরই বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ এর উদ্বোধন করা হবে।
সংস্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মূল নকশা হাতে না থাকায় জাতীয় সংসদ ভবনে অবকাঠামোগত সংস্কারে ঝামেলায় পড়তেন তারা। সংসদ চত্বরে নতুন কোনো কাজে হাত দেয়া নিয়েও দেখা দিত জটিলতা। তবে জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশা আসার পর সেটি ধরে সংসদ ভবনে সংস্কারকাজ হচ্ছে।
সংস্লিস্ট কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮৪ সালে উত্তর প্লাজা নির্মিত হওয়ায় দীর্ঘদিন ব্যবহার জনিত কারনে রেড ব্রীকের স্থায়ীত্ব নষ্ট হয়ে গেছে ফলে বৃষ্টি হলেই ব্রীক সারফেস ও জয়েন্ট সমুহে শ্যাওলা ও ঘাস জন্মায়। একারনে উত্তর ও দক্ষিণ প্লাজার উপরিতলে বিদ্যমান পুরাতন সিরামিক ব্রীক ও মার্বেল পাথর সম্পুর্ণরুপে অপসারণ করে কংক্রিট ছাদের উপরিভাগে পানি নিরোধী কটিং স্থাপন করে লুই আই কানের নক্সা অনুযায়ী বর্তমান সংসদ ভবনের স্থাপত্য শৈলী ও নান্দনিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে একই রং এবং আকৃতির নতুন সিরামিক ব্রীক এবং মার্বেল পাথর যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের জন্য ৯২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধিনে জাতীয় সংসদ ভবনের ক্যাবিনেট কক্ষ, স্থায়ী কমিটি কক্ষ-১ এবং শপথ কক্ষের আধুনিকায়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া সংসদ ভবনে বঙ্গবন্ধু আর্কাইভ নির্মাণ, স্থায়ী কমিটি কক্ষ-২ ও ৩, সংসদ ভবন এলাকার সব ওয়াকওয়ে ও ফুটপাথের নষ্ট হয়ে যাওয়া ইট (পেভমেন্ট ব্রিকস) পরিবর্তন কাজসহ ফেয়ার ফেস দেয়ালে ও সিরামিক ব্রিক সার্ফেসে ওয়াটার রিপিলেন্ট প্রয়োগের কাজ লাভ হয়েছে।
গণপূর্ত অধিদফতরের শেরেবাংলা নগর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী সংসদ ভবনের ভেতরে ও বাইরে মুল নকশা অনুযায়ী সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তিনি জানান, উত্তর প্লাজার নকশাবহির্ভূত বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নকশা মেনে কর্পোরেট আদলে অত্যাধুনিক অফিসকক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাবিনেট কক্ষ, স্থায়ী কমিটি কক্ষ-১, ২ ও ৩ এবং শপথ কক্ষের আধুনিকায়ন কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব নির্মাণ কাজের ইন্টেরিয়র ডিজাইন প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে অনুমোদনের পরই কাজ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী জানান, স্থপতি লুই আই কানের মূল নকশার আলোকে পুরো জাতীয় সংসদ ভবনকে সাজানো হয়েছে। মূল নকশার আলোকে সাজানোর পাশাপাশি সংসদ ভবনের পরিবেশ উন্নয়নে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম ও শেষ অধিবেশনে প্রথম সংসদ ভবন ব্যবহৃত হয়। তখন থেকেই আইন প্রণয়ন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূল কেন্দ্র হিসেবে এই ভবন ব্যবহৃত হয়ে আসছে।