ফার্নিচার না কিনেই চার কোটি টাকা লোপাট করা নির্বাহী প্রকৌশলী আইয়ুব আলী ধরা ছোয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জন্য ফার্নিচার ক্রয় না করেই চার কোটি টাকা বিল পরিশোধের নামে তা লোপাট করা হয়েছে। গণপূর্ত কাঠের কারখানা বিভাগের তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে উত্তরা এ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত মো.আইয়ুব আলীসহ সংস্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদার যোগসাজসে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এই টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অধিদপ্তরে এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গণপূর্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ফার্নিচার সরবরাহ না নিয়েই চার কোটি টাকা বিল পরিশোধ করে তা নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আদিব এন্টারপ্রাইজ এর মালিক রাজিব মিলে আত্মসাৎ করলেও এতোদিন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর দূর্নীতির বিষয়টি জানাজানি হলে অভিযুক্ত প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তা গোপানে ম্যানেজ করার চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জন্য সোফা, চেয়ার, টেবিল, কম্পিউটার টেবিল, স্টিলের আলমারিসহ ১৫৮০টি বিভিন্ন ফার্নিচার কেনার জন্য আদিব এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তুু তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজসে ফার্নিচার সরবরাহ না নিয়ে বিল পরিশোধ করে পুরো টাকা আত্মাসাৎ করেন। তার সঙ্গে উপবিভাগীয় প্রকৌশলীও জড়িত রয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী হওয়ায় এনিয়ে এতোদিন কেউ কোন কথা বলার সাহস পায়নি। সম্প্রতি বিষয়টি ধরা পড়ার পর বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী ঠিকাদারের বিভিন্ন কাজের জামানত এর টাকা বাজেয়াপ্ত করে সেই টাকা দিয়ে ফার্নিচারগুলো ক্রয়ের উদ্যোগ নেন। সরকার পরিবর্তনের পর ঠিকাদার রাজিব পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত কাঠের কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধান করার। জামানতের টাকা দিয়ে কিছু ফার্নিচার ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। বাকি ফার্নিচারের বিষয়েও সমাধানের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে কোন তদন্ত কমিটি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন তদন্ত কমিটি হয়নি। এর বাইরে তিনি আর কোন কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এর জন্য ফার্নিচার উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান হাতিল এর ফার্নিচার দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে বাইরে থেকে নিন্মমানের প্রায় চার কোটি টাকার ফার্নিচার বানিয়ে হাতিল এর স্টিকার লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ধরা পড়ে বলে জানা গেছে। পরে সব নকল ফার্নিচার ফেরত দিয়ে হাতিল এর ফার্নিচার দিতে বাধ্য করা হয় সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানকে।

দেশের ৩৭টি সার্কিট হাউজ সম্প্রসারণ প্রকল্পের ফার্নিচার ক্রয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আইয়ুব আলী ও সংস্লিষ্ট উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর অনিয়ম নিয়েও রয়েছে ব্যাপক অভিযোগ।

অভিযোগের বিষয়ে  বক্তব্য জানার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর টেলিফোনে ও হোয়াটআপ এ একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *