নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল অন্তর্বর্তীকালিন সরকার। গঠন করা হয়েছিল ১১টি সংস্কার কমিশন। কমিশনগুলো আড়াই হাজারেরও বেশি সুপারিশ সরকারের কাছে জমাও দিয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া বাকি ১০টি কমিশনের দুই হাজারেরও বেশি সুপারিশ রয়েছে যা সরকার অধ্যাদেশ জারি করে অথবা নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করতে পারে। কিন্তুু দৃশ্যমান কোন সংস্কার না হওয়ায় এগুলো হিমাগারেই রয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই এমন সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রথম ধাপে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, সংবিধান সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন, শ্রম সংস্কার কমিশন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনগুলো আড়াই হাজারেরও বেশি সুপারিশ দিলেও উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ছাড়াই দুই দফায় জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুদকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৩৬৭টি সংস্কার প্রস্তাবকে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ ঘোষণা করেছিল। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে ৯টি, পুলিশ সংস্কার নিয়ে ১৩টি, জনপ্রশাসনের ১৮টি, বিচার বিভাগ নিয়ে ৩৮টি এবং দুদক নিয়ে ৪৩টি প্রস্তাব রয়েছে। যার মধ্যে বিভিন্ন কমিশনের মাত্র ৩৭টি সুপারিশ ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নের চিত্র ধীরগতি হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রথম দফায় ৬টি কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পর প্রেস ব্রিফিংএ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন যে প্রস্তাবগুলো নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো এই সরকার বিবেচনা করবে। প্রায় অর্ধেক আশু করণীয় বাস্তবায়ন করতে এক মাসের মধ্যে করা সম্ভব। বাকি সংস্কার করতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। কিছু কিছু সংস্কার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে নানামুখী আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। ১২১টি সুপারিশের বাইরে পাঁচটি কমিশনের ১৬৬টি বিভিন্ন সংস্কার সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তৃতীয় দফায় আলোচনা করেছে। এই সুপারিশগুলো মূলত সংবিধান সম্পর্কিত। আলোচনা করে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া প্রনয়ন করা হয়েছে। প্রথম অংশের পটভূমিতে পাঁচটি প্রস্তাব, দ্বিতীয় অংশে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি সিদ্ধান্ত এবং তৃতীয় অংশে রয়েছে আটটি অঙ্গীকার। আবার ঐকমত্য হওয়া ৮৪টির মধ্যে ১৪টিতে নোট অব ডিসেন্টও (ভিন্নমত) রয়েছে।
সংস্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আশু করণীয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন আচরণবিধি প্রণয়ন, গণশুনানি এবং নাগরিকদের অভিযোগ শোনা, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থায়ী নাগরিক কমিটি গঠন, মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা হ্রাস করা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ আর রাজস্ব বোর্ড একসঙ্গে এক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা। কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ ঘোষণা, জেলা প্রশাসককে জেলা কমিশনার হিসেবে অভিহিত করা, উপজেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট স্থাপন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন করা। সংস্কার কমিশন আশু করণীয় হিসেবে জুডিশিয়াল সার্ভিস সদস্যদের জন্য আচরণবিধি নির্ধারণ, ফৌজদারি মামলা তদন্তে আলাদা ফৌজদারি সার্ভিস, বাণিজ্যিক আদালত গঠন, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে আদালতে সহায়ক কর্মচারী নিয়োগ, প্রতিটি আদালতে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন, বিভিন্ন মামলায় বদলি হওয়া পুলিশের অনলাইনে সাক্ষ্যগ্রহণের ব্যবস্থার সুপারিশ করেছিল।
মন্ত্রণালয়গুলো যুক্তিসংগতভাবে হ্রাস করে সরকারের সব মন্ত্রণালয়কে ২৫টি মন্ত্রণালয় ও ৪০টি বিভাগে পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ করেছিল জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে সব মন্ত্রণালয়কে সমপ্রকৃতির পাঁচটি স্বল্পমেয়াদী গুচ্ছে বিভক্ত করা, একটির বদলে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন এবং উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশে আনার মতো প্রস্তাবও করেছিল।
এছাড়া আশু বাস্তবায়নযোগ্য পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে পুলিশ কমিশন ও পুলিশের জন্য পরিপূর্ণ মেডিকেল সার্ভিস গঠন; রাতে কারও বাসায় তল্লাশির সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি বা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ; এফআইআরবহির্ভূত আসামি গ্রেপ্তার না করা, ভুক্তভোগী ও সাক্ষী সুরক্ষার জন্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও আহত করার জন্য দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনিপ্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেওয়া। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নের তালিকায় থাকা ৩৮টি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়ন, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের জন্য আচরণ বিধিমালা জারি, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠা, বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা।
এছাড়া দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৩টি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে দুদক আইন সংশোধন করে কমিশনারের সংখ্যা পাঁচজনে উন্নীতকরণ, দুদক কমিশনারের মেয়াদ পাঁচ বছর করা, রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ-সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন, আয়কর আইনের একটি ধারা সংশোধন করে দুদককে কোনো তথ্য বা দলিল দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ। দুদকের নিজস্ব বেতন কাঠামো, যেসব জেলায় দুদকের কার্যালয় রয়েছে, সেখানে বিশেষ জজ আদালত প্রতিষ্ঠা, বেসরকারি খাতের ঘুষ লেনদেনকে শাস্তির আওতায় আনা, দুদক আইনের ৩২ক ধারা বাতিল, উচ্চমাত্রার দুর্নীতি তদন্তে বিভিন্ন এজেন্সির সমন্বয়ে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন, পর্যায়ক্রমে সব জেলায় দুদকের জেলা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২৫ মে একটি পত্র বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠিয়ে কিছু দিক নির্দেশনা দেয়। তাতে বলা হয়, এই সুপারিশগুলো আদৌ বাস্তবায়নযোগ্য কিনা, বাস্তবায়নযোগ্য হলে বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময়সীমা, বাস্তবায়নের প্রভাব কী হবে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মতামত নিতে হবে। এর পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা আবার উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করবে।
প্রশাসনের সংস্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ইচ্ছে করলে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ অধ্যাদেশ জারি করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা যায়। অন্যগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব ও আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা যেত। কিন্তুুু অধিকাংশ সুপারিশই বাস্তবায়ন করা হয়নি। যেমন পুলিশের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এই ধরনের একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। পুলিশের কার্যক্রমের উপর নজরদারি বাড়ানো এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষার ওপর জোর দেওয়ার জন্যই এমন সুপারিশ ছিল কমিশনের। একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই কমিশন গঠন করা যেত। এর ফলে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যেত। তবে এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
তবে কয়েকটি সুপারিশ ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এমন সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গত ২১ জানুয়ারি স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের বিধান রেখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর গত ১৩ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হয়েছে।
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই এমন সুপারিশগুলো এখনো কেন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সংস্কার নিয়ে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, এখনো পর্যন্ত তেমন কোন সংস্কার হয়নি। সরকারের পলিসিগত সমস্যা রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করবে একমত হওয়ার পরে নাকি সবগুলো কমিশনের সুপারিশ আলাদা আলাদা ভাবে বাস্তবায়ন করবে এ ব্যাপারে সরকারের নীতিগত কোনো ব্যাখ্যা স্পষ্ট না। নীতিগত পরিবর্তন আর সংস্কার ‘এক নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, নীতির কিছু পরিবর্তন সবসময়ই হয়। কিন্তু সংস্কারের সুযোগ সবসময় আসে না। সংস্কার একটা মেজর কাজ। এটার ব্যাপারে দৃশ্যমান হতে হবে এবং সবার কাছে এটা বোধগম্য হতে হবে যে সংস্কার হচ্ছে। সব দলকে গিয়ে বেশিরভাগ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো কঠিন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঐকমত্য কোন প্রক্রিয়ায় হবে, সেই পদ্ধতিই ঐকমত্য কমিশন ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি। এই ধরনের কোনো পদ্ধতি তারা তুলে ধরতে পারেনি যে আমরা ‘একমত বলতে এটা বোঝাচ্ছি।’
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ১১টি কমিশনের অনেক সুপারিশ রয়েছে যার সবগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব এই সরকারের ওপর বর্তায় না। বর্তমান সরকার কিছুটা বাস্তবায়ন করবে, আবার কিছু সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকার করবে। কিছু সুপারিশ রয়েছে, যা বাস্তবায়নের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। সেগুলো বাস্তবায়নে কোনও অর্থের প্রয়োজন হবে না। আবার কিছু সুপারিশ আছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতে আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের থাকতে হবে। তা না হলে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন বিলম্বিত হবে, অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ অনেক সুপারিশ রয়েছে, যা আমলাদের বিপক্ষে গেছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। অন্যান্য কমিশনের যে সুপারিশ সংবিধান সংশোধন ছাড়াই অধ্যাদেশ জারি করে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিন্তুু সরকার এই সুপারিশ বাস্তবায়নে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের উচিৎ ছিলো আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা। তা না হলে এগুলো ভবিষ্যতে ঝুলে যেতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, ১৬৬টি সুপারিশকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে এগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থেকে বাছাই করে যেগুলো আশু বাস্তবায়ন করা সম্ভব, আইন সংশোধন ও নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বা অফিস আদেশের মাধ্যমে সম্ভব- সবকিছু করার জন্য সরকারের কাছে একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে। এই সুপারিশ গুলোর মধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ও সংবিধান সংস্কার কমিশন জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল করার সুপারিশ করেছিল। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশগুলোও দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।